শনিবার ● ২৫ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলা নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টরদের অশালীন আচরণে ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা
ভোলা নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টরদের অশালীন আচরণে ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলা নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টটরদের শোসন, নির্যাতন অশালীন আচারণ ও গালমন্দের প্রতিবাদে প্রশিক্ষণরত নার্সরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। শিক্ষকদের অত্যাচারে জিম্মি হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে শুক্রবার রাতে হোস্টেলের ভিতর উত্তেজিত হয়ে উঠে। অভিযোগ রয়েছে, এলাকার ইনস্ট্রাক্টররা একজন ১০ বছরেরও অধিক সময় নার্সিং ইনস্টিটিউটে চাকুরি করায় তারা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে।
নার্সিং ইনস্টিটিউটের ৩য় বর্ষের ছাত্রী নুসরাত জাহান নিপা, সুমাইয়া আক্তার ও রুমা আক্তারসহ একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, তারা এখানে শিক্ষা নিতে এসে প্রকৃত শিক্ষা পাচ্ছেন না। শুধু ম্যাডামদের গালমন্দ শুনতে হয় তাদের। কারণে অকারণে তাদের বংশ তুলে গালমন্দ করেন ইনস্ট্রাক্টর নন্দা রানী দাস। তার হাত এত লম্বা যে তিনি ইনচার্জকেই তোয়াক্কা করেন না। প্রতিষ্ঠানে ঝাড়–দার ও মালী থাকা সত্বেও ছাত্রীদেরকে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ঝাড়– দেয়াসহ ছাদের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করানো হয় । ক্লাসে পড়া না পারলে ছাত্রীদের বাবা-মা তুলে অকথ্যা ভাষায় গালিদেন। সামান্য কোনো ভুল হলেই পরীক্ষার মার্ক কেটে দেয়া হয়। ছাত্রীরা তাদের পরীক্ষার খাতাও দেখতে পারেনা। ভুল করলেই কান ধরে উঠবস করানো হয় তাদের। হাসপাতালে তাদের দিয়ে অতিরিক্ত ডিউটি করানো হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
শিক্ষার্থী নিলুফা আক্তার ও কুলছুম জানান, মৌখিক পরীক্ষায় কোনো শিক্ষকের শাস্তি কিংবা কিছু বলার অধিকার নেই। কিন্তু নন্দা রাণী মৌখিক পরীক্ষায় কোনো ছাত্রী প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেই তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এরকম অনেক অভিযোগ রয়েছে এই ইনস্ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে। এমনকি বিভিন্ন সময়ে কোনো ভুল হলে ছাত্রীদেরকে খাবার টেবিল থেকে উঠিয়ে দেয়া হয়। কোনো প্রতিবাদ করলেই পরিক্ষার সময় নম্বর কম দেয়ার হুমকি দিয়ে থামিয়ে রাখা হয় তাদের। এর ভয়ে বিগত কয়েক বছর নির্বিচারে ইনস্ট্রাক্টরদের অত্যাচার নিরবে সহ্য করে যাচ্ছে ছাত্রীরা।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি চাকুরীতে একই কর্মস্থলে তিন বছরের অধিক থাকার নিয়ম না থাকলেও এখানকার ইনস্ট্রাক্টররা একজন ১০ বছরেরও অধিক একই কর্মস্থলে রয়েছেন। আর এসুযোগেই তারা নিজের মন মত প্রতিষ্ঠনটি চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে অন্যতম হলো প্রভাবশালী শিক্ষক নন্দা রাণী দাস। ২০১০ সালের জুলাই মাসে তিনি ভোলা নার্সিং ইনস্টিটিউটে ইনস্ট্রাক্টর পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই নন্দা রানী ছাত্রীদেরকে মানসিকভাবে টর্চার করে আসছেন। কোনো কারন ছাড়াই ছাত্রীদের বাবা-মা ও বংশ তুলে গাল দিতে দিদাবোধ করেন না তিনি। ছাত্রীরা প্রতিবাদ বা ইনচার্জকে জানালে পরীক্ষায় মার্ক কম দেয়ার হুমকি দেন তিনি। তার ভয়ে ছাত্রীরা সব সময় আতঙ্কে থাকেন। তার ভয়ে মুখ খুলেন না স্বয়ং নার্সিং ইনচার্জও।
এব্যাপারে অভিযুক্ত ইনস্ট্রাক্টর নন্দা রাণী দাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি এরকম কোনো আচরণ ছাত্রীদের সাথে করেন না। তিনি পড়া লেখার জন্য রাগ করেন।
ভোলা নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ রুখসানা পারভীন সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে তাকে এরকম কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
-ইএ/এফএইচ