

বৃহস্পতিবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » হাতের কাজে পারদর্শী ছোট্ট মাইশা
হাতের কাজে পারদর্শী ছোট্ট মাইশা
বিশেষ প্রতিনিধি • ছোট্ট মাইশা। বয়স মাত্র ১৩ বছর। এবয়সে ছোটরা যখন পড়াশুনার ফাঁকে টিভি দেখা কিংবা খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে, ঠিক সে সময়ে মাইশা ব্যস্ত থাকে হাতের কাজ নিয়ে। নানান রং ও আকারের পুতি দিয়ে সে তৈরী করে বিভিন্ন প্রকারের খেলনা, ব্যাগ ইত্যাদি। ৫ম শ্রেনীতে পড়–য়া চঞ্চল এই মেয়েটির পুরো নাম মারজানা আইভি মাইশা। বাবা সালাউদ্দিন হারুন নৃত্য শিল্পী। মা কাওছার জাহান শিখা গৃহিনী। বড় বোন সানজানা আইভি বর্ষাও বাবার মত নৃত্য শিল্পী। মেঝ ভাই চমক ব্যস্ত গান শেখা নিয়ে। দু’ বছর আগে টিভিতে পুতি দিয়ে বিভিন্ন শোপিস বানানোর কৌশল দেখে মনে মনে তা আয়ত্ত করে মাইশা। তার আগ্রহতেই বাবা দোকান থেকে কিনে দেন পুতি, সুই, সুতো আর রগ। বাসায় এসে প্রথমে কৌশলটি আয়ত্তে নিতে কিছুটা সময় লাগে মাইশার। এরপর একে একে বানিয়ে ফেলেন, চাবির রিং, ব্যাগ, স্টবেরী, বক, হাঁশ, কলা, আপেল, নারকেল, মুলা, গাজর, পুতুল, ফুলের টব, মাছ, বাঁধা কপি, আনারস, কচ্ছব, খরগোশ, ডলফিন, আনার, কলা, ফলের ঝুড়ি, টিস্যু বক্স, মোবাইল ব্যাগ, ব্রেস লাইট, ল্যাম্প সেটসহ নানান শোপিস। মাইশা জানান, ভবিষ্যতে সে তাজমহল, মক্কা শরীফ, সংসদ ভবন, নৌকা বানাতে চায়। কিন্তু এতে অনেক টাকার উপকরন লাগবে বলে জানায় মাইশা। তার বানানো এসব চমৎকার শোপিস গুলো যে দেখে তারই নিতে ইচ্ছে হবে। এ প্রতিবেদককেও মাইশা একটি চাবির রিং ও পুতুল উপহার দেয়। তার এসব হাতে বানানো শোপিস গুলো বিক্রিও হয় ভালো। কোন প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই ছোট্ট মাইশার এমন প্রতিভা সত্যিই বিরল। বাবা মা আর বোনের অনুপ্রেরনাতেই মাইশা তার শিল্পকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বাবা সালাউদ্দিন হারুন বলেন, মেয়ের শখ পুতি দিয়ে বিভিন্ন শোপিস তৈরী করা। তাই ওর আবদার রাখতেই আমি পুতি সহ বিভিন্ন উপকরন কিনে দেই। মা কাওছার জাহান শিখা বলেন, আমিও কাজের ফাঁকে মেয়ের কাছ থেকে কৌশলটি রপ্ত করার চেষ্ঠা করি। মাইশা জানায়, পড়াশোনার ফাঁকে টিভি না দেখে বা খেলাধুলা না করে সে পুতি দিয়ে এসব জিনিস বানায়। এতে তার কোন বিরক্ত লাগে না। বাজারে বিভিন্ন নামের ও দামের হরেক রংয়ের পুতি পাওয়া যায়। যেমন লাউ পুতি, ছক্কা পুতি, মুক্তা পুতি, কিছমিছ পুতি, স্টবেরী পুতি, ক্রিস্টাল পুতি ইত্যাদি। এগুলোর কেজি প্রকার ভেদে ১২শ’ টাকা থেকে ২৫শ’ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তার তৈরীকৃত এসব শোপিস এখন পর্যন্ত কোন মেলায় প্রদর্শিত হয়নি। মাইশা জানায়, ভোলায় যদি কোন মেলার আয়োজন করা হয় তবে সে তার এই শিল্পকর্ম দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করবে। একাজে কোন সরকারী সাহায্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে মাইশা জানায়, সরকারী সাহায্য পেলে সে পুতি দিয়ে তৈরী এসব পণ্যের একটি শোরুম দেয়ার আগ্রহ আছে তার। ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা মাইশার। সে জানায়, ডাক্তার হয়ে আমি সাধারণ মানুষের সেবা করতে চাই। তার এই শিল্পকর্মে পরিবারের সদস্যরা সহযোগীতা করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় মাইশা।