শুক্রবার ● ৩ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » সাংবাদিকতার অনুপ্রেরণা পরিবার থেকেই পেয়েছি- চরফ্যাশনের প্রথম সাংবাদিক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন
সাংবাদিকতার অনুপ্রেরণা পরিবার থেকেই পেয়েছি- চরফ্যাশনের প্রথম সাংবাদিক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন
সাংবাদিকতার উৎসাহ পরিবার থেকে পেয়েছেন এমন সংখ্যা কম হলেও ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় এমন একজন সাংবাদিক রয়েছেন যার সাংবাদিকতার উৎসাহ পরিবার থেকেই হয়েছে। তিনি চরফ্যাশন উপজেলার প্রথম সাংবাদিক। শুধু সাংবাদিকতাই নয় সাংবাদিকতা পেশায় উদ্ভুদ্ধ করার জন্যও রয়েছে তার অসামান্য অবদান। তিনি চরফ্যাশন উপজেলার প্রথম কলম সৈনিক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন (বাবলু)। ভোলার ৭টি উপজেলার প্রথম সাংবাদিক, সিনিয়র সাংবাদিক ও প্রেস ক্লাব সমূহের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সম্পাদকের সাক্ষাতকার প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে ভোলার সংবাদ ডট কম। ইতোমধ্যে ভোলার প্রথম সাংবাদিক, সিনিয়র সাংবাদিক ও লালমোহন উপজেলার প্রথম সাংবাদিক ও প্রেসক্লাব এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির সাক্ষাতকার প্রকাশ করেছে ভোলার সংবাদ ডট কম এবং তাতে পাঠক মহলের ব্যাপক সারা পাওয়া গেছে। সম্প্রতি চরফ্যাশন উপজেলার প্রথম এই সাংবাদিক মুখোমুখি হয়েছেন ভোলার সংবাদ ডট কম’র। জানিয়েছেন তার সাংবাদিকতা জীবনের ইতিবৃত্ত। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন ভোলার সংবাদ ডট কম এর প্রধান সম্পাদক আরিফুল ইসলাম রিয়াজ ও ভোলার সংবাদ এর সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন।
ভোলার সংবাদঃ- ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর আফজাল গ্রামের বাসিন্দা মারহুম মো. মোবারক আলী ও মারহুমাহ মোসাম্মাৎ ফজিলাতুন নেছার কোল জুড়ে জন্ম গ্রহণ করেন মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। চার ভাই, তিন বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। ১৯৭০ সালের মহাপ্রলয়ংকরী বন্যায় সকল কিছু ভেসে যাবার কারণে তিনি সঠিক জন্ম তারিখের কোন লিখিত নথি পাইনি এই সাংবাদিক। কিন্তু যতটুক জেনেছেন তার আলোকে, জন্মদিন সোমবার সকাল বেলা, ১৪ ই মে ১৯৬২ ইং। সেদিন ছিল ঈদ-উল-আযহার দিন। অর্থাৎ ৯ জিলহজ্জ ১৩৮১ হিজরী। ৩১ বৈশাখ ১৩৬৯ বঙ্গাব্দ। তবে বর্তমানে সনদ পত্রে তার জন্মতারিখ ১ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬ইং উল্লেখ আছে। শৈশব এবং কৈশোর দু’টোই কেটেছে চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর আফজাল গ্রামে। পড়াশুনা করেছেন চর মাদ্রাজ, ভোলা সদর, কুমিল্লা সদর, ঢাকা ও সৌউদী আরবের রিয়াদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। ১৯৭২ সালে কেরামতগঞ্জ সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। প্রাইমারীর গন্ডি পেরিয়ে মাদরাসায় ভর্তি হন এবং দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৯৭৮ সালে, তৎকালিন চরমাদ্রাজ ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসা থেকে। তিনি জানান, তখনকার মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের আলিম ছিল তৎকালীন এসএসসির সমমান এবং তা ছিল ১৯৮০ সালে, ভোলা দারুল হাদীস আলীয়া মাদরাসা থেকে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম স্থানে উত্তীর্ণ হন মেধাবী এই সাংবাদিক। এরপর পড়াশুনার জন্য চলে যান কুমিল্লায়। ১৯৮২ সালে কুমিল্লা সদরের চকবাজারস্থ, ইসলামিয়া আলীয়া মাদরাসা থেকে ফাজিল সমমান (তৎকালীন) এইচএসসি পাশ করেন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। সারা বাংলাদেশের মধ্যে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন তিনি। ফাজিল পাশ করার পর সরকারী মাদরাসা-ই-আলীয়া ঢাকা থেকে কামিল (মুহাদ্দিস গ্রুপ) পাশ করেন ১৯৮৫ সালে। এর পরের গল্পটা ভিন্ন। ১৯৮৬ সালে সৌদি আরবের রিয়াদস্থ কিং সাউদ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশীপ নিয়ে পড়তে যান মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। দু’বছরে আরবী ভাষা কোর্স সম্পন্ন করেন সেখান থেকে এবং পরীক্ষার রেজাল্টে মেধা তালিকায় স্থান পান তিনি। ১৯৮৮ সালের শেষের দিকে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব এডুকেশনে ‘আরবী ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে’ লিসান্স (অনার্স) কোর্স শুরু করেন। ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে ফিল্ড ওয়ার্ক শেষ করে ঢাকায় ফিরে আসেন সাংবাদিক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। পরবর্তীতে কামিল-ই মাস্টার্স ডিগ্রীর সমতা লাভ করে। এরপরও দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে এম.এ. পাশ করেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৩ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া থেকে ‘ডক্টরেট অব ফিলোসফি’ বা পি-এইচ.ডি ডিগ্রী লাভ করেন ভোলার চরফ্যাশনের সন্তান সাংবাদিক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। পড়াশুনা শেষ করে কর্মজীবনে পা দেন তিনি। ছাড়েননি সাংবাদিকতা পেশাও। মহতি এই পেশাকে আগলে ধরে এখনো পথ চলছেন মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। বক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। স্ত্রী মহসীনা আকতার পেশায় চাকুরীজীবী। ২ ছেলে ১ মেয়ের জনক তিনি।
ভোলার সংবাদঃ-
কেমন আছেন ?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
ভোলার সংবাদঃ-
আমরা জানি আপনি চরফ্যাশন উপজেলায় প্রথম সাংবাদিকতা শুরু করেছেন। আপনার সাংবাদিকতার শুরু কিভাবে?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
১৯৭৬ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে, সাপ্তাহিক জাহানে নও পত্রিকায়। ঠিক তারিখটা মনে নেই। চরফ্যাশন উপজেলার চরমাদ্রাজ ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার একটি সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানের সংবাদ দিয়ে সংবাদিকতা শুরু। ওই পত্রিকার শিশু-কিশোর বিভাগ শাহিনের মাহফিলের সদস্য হিসাবে নিয়মিত লেখা পাঠাতাম। ছড়া, পুরো সংখ্যাটি কেমন লাগলো এবং ছোট্ট সংবাদ ইত্যাদি। বাংলা হাতের লেখার খাতা ছিড়ে তাতে লিখে ডাকযোগে ইনভেলাপে করে পাঠিয়ে দিতাম। পরের সপ্তাহ গুলোতে কি ছাপা হল বা হল না তার অপেক্ষা করতাম । এভাবেই শুরু।
ভোলার সংবাদঃ-
প্রথম লেখা রিপোর্টের শিরোনাম কি ছিল?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
একটি চার লাইনের ছড়া ছাপা হয়েছিল প্রথম। শিরোনাম ছিল ‘রাণু-রুবী কি করে?’। ‘সাপ্তাহিক জাহানে নও’ পত্রিকায়। সংবাদ ছাপা হয়েছিল ‘সংস্কৃতি সংবাদ’ শিরোনামের কলামে।
ভোলার সংবাদঃ-
প্রথম সংবাদ ছাপা পত্রিকাটি কিভাবে পেলেন/নিজের লেখা কিভাবে দেখলেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
তখন ডাক যোগে পত্রিকা আসত। প্রথম লেখা ছাপা পত্রিকাটি পাবার আগে আমাদের প্রতিষ্ঠানের এসিস্ট্যান্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট সাহেব আমাকে নিয়ে টিপ্পনি কাটলেন। ‘পড়ালেখা করবে কি! এখন সংবাদ লেখে’। লেখাটা তার হাতে পড়ায় একটু বিব্রতবোধ করলাম। তবে মনে মনে খুবই খুশী লাগলো। পত্রিকাটি পেয়ে একটি কপি বহুদিন যত্ম করে রেখেছিলাম।
ভোলার সংবাদঃ-
প্রথম সাংবাদিকতার প্রেরণা কিভাবে পেলেন/কে দিল?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
আমার বাবা বাড়ীতে পত্রিকা রাখতেন। মাহে নও নামে একটি পত্রিকা রাখতেন যা ছিল মাসিক। এছাড়া অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক জাহানে নও পত্রিকাটিও রাখতেন। বরং তার কাছেই মাদ্রাজ ইউনিয়নের অন্যান্য পাঠকদের পুরো পত্রিকার প্যাকেটটি চলে আসতো। বাড়ীর ওই পত্রিকার শিশু-কিশোর বিভাগ ‘শাহিনের মাহফিল’ এর ভক্ত ছিলাম। পড়তে পড়তে এক সময় লেখা ছাপা হল, তারপর ক্ষুদে সংবাদদাতা, তারপর সংবাদাতা এবং এরপর নিজস্ব সংবাদদাতাও হয়ে গেলাম। সে হিসেবে প্রেরণা আমার বাবার। প্রেরণা আমার পরিবারিক পরিবেশের।
ভোলার সংবাদঃ-
কোন কোন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সাপ্তাহিক জাহানে নও। ১৯৭৯-১৯৮০ সাল দিনাজপুরের দৈনিক প্রতিদিন এবং সাপ্তাহিক পূনর্ভবায় সংবাদদাতা হিসেবে, ১৯৮১-১৯৮২ সালে কুমিল্লার পাক্ষিক ‘সভ্যতা’য় সম্পদনা সহকারী হসেবে, ১৯৮২ এর মার্চ থেকে ১৯৮৫ এর ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘মাসিক তাহজীব’ এর শিশু-কিশোর বিভাগ ফুলকলি’র পরিচালক ও সম্পাদনা সহকারী হিসেবে, ১৯৮৩ সালের জুলাই থেকে ১৯৮৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আরবী ‘মাসিক আত-তা’লীম’ পত্রিকায় সম্পাদনা সহকারী হিসেবে, ১৯৮৪ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৮৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ঢাকার দৈনিক জনপদ-এ সাব-এডিটর হিসেবে, ১৯৮৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দৈনিক ‘পত্রিকা’য় সাব এডিটর হিসেবে, একই বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দৈনিক নব অভিযান পত্রিকায় সাব এডিটর হিসেবে এবং সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দৈনিক নব অভিযানে সউদী আরবের রিয়াদ থেকে লেখালেখি করি।
সউদী আরবে লেখাপড়ার ফাঁকে প্রতি বছর সামার সেমিস্টারে দেশে আসতাম। চরফ্যাশনের অবিসংবাদিত নেতা, চরফ্যাশন কলেজের প্রিন্সিপাল, মরহুম মো.নজরুল ইসলাম স্যারের প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক উপকূল এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশেও কাজ করেছিলাম। চরফ্যাশন কলেজের বর্তমান প্রিন্সিপাল কায়সার আহম্মেদ দুলাল ভাই ছিলেন এর সম্পাদক। ১৯৯৪ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দৈনিক আজকের ভোলার সহকারী সম্পাদক হিসেবে, ১৯৯৫ সালের জানুয়ারী থেকে ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রেডিও বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থায় এবং ১৯৯৫ সালের মার্চ মাস থেকে ১৯৯৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রেডিও বাংলাদেশ এর বর্হিবিশ্ব কার্যক্রম এর আরবী বিভাগের সংবাদ প্রস্তুতকারক, পাঠক ও উপস্থাপক হিসেবে কাজ করি। ১৯৯৭ সালের আগস্ট থেকে বাংলা মাসিক ‘সংস্কার’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে কাজ শুরু করি।
ভোলার সংবাদঃ-
এখন কোন পত্রিকায় কাজ করছেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
বর্তমানে বাংলা মাসিক ‘সংস্কার’ এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। পাশাপাশি songskar.net অনলাইন নিউজ পোর্টালে এর সম্পাদক হিসেবে কাজ করছি।
ভোলার সংবাদঃ-
আপনার কর্মজীবনের শুরু কিভাবে?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
কর্মজীবন শুরু করি একটি আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থায়। ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারী তথ্য অফিসার হিসেবে আই,ডব্লিউ,সি নামের একটি সংস্থায় চাকুরী শুরু করি। অফিস ছিল ঢাকার বারিধারায়। পরে একই অফিসের প্রকল্প ও ইয়াতীম বিভাগের পরিচালক পদে কাজ করি ১৪ জুন ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত। ১৫ জুন ১৯৯৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশস্থ কুয়েত দূতাবাসে অফিসার হিসেবে কাজ করি। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ২০০৩ সালের জুন পর্যন্ত দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে কাজ করি। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জুলাই ২০০৩ থেকে ৩০ এপ্রিল ২০১০ পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক এবং এরপর থেকে ৮ নভেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত সহযোগী অধ্যাপক আর তারপর থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত অধ্যাপক হিসেবে কাজ করি। ২০০৮ সালের ২০ মে থেকে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অধ্যাপনার পাশাপাশি এরাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করি। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ঢাকায় একটি বেসরকারী সংস্থায় বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছি।
ভোলার সংবাদঃ-
৭০ এর বন্যায় কি দেখলেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
৭০ এর বন্যা সবাইকে কাঁদিয়ে গেছে। প্রলয়ংকরী বন্যায় এক বাড়ীর ৩৯ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র একজন বেঁচে ছিল। মৃতদেহের খোঁজে ঘুরে বেড়িয়েছি-ছোটদের অনুগামী দলের সাথে। যারা বন্যা পরবর্তী লাশ দাফন বা মাটি খুঁড়ে পুতে রাখার কাজে নিয়োজিত ছিল তাদের সাথে। সে এক বিভৎস চিত্র। যারা দেখেনি তাদের কাছে কল্পনার মত। রূপকথার মত। ১২ নভেম্বর আমি সবে মাত্র তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র। ঘরদোর পড়ে গিয়ে বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে। গরুগুলো ছুটাছুটি করছে। বাড়ির বড় এবং পুরানো আম গাছে বাবা-মা আমাদের উঠিয়ে দিলেন। পরে তারাও আশ্রয় নিলেন। ‘পৌচ্ছাল’(পশ্চিম দিক থেকে প্রচণ্ড বেগে ঝড়) শুরুর আগে ঝড়ের তাণ্ডব কয়েক মিনিটের জন্য থামলো। একদম নিশ্চুপ। শুধু শোনা যাচ্ছিল চারদিকের কিছু লোকের বা জীব জন্তুর গোঙ্গানী। পানি গেলার গড় গড় শব্দ। কিন্তু কিছুই করার নেই। কাউকেই সাহায্য করার সুযোগ নেই। আমরা ২০/২২ ফুট উঁচু একটি আম গাছের ডালে। চারদিকে পানি। অথই পানি। এরপর শুরু হল ‘পৌচ্ছাল’। আর কমতে শুরু করল পানির উচ্চতা। ভোর হল। ভেজা কাকের মত আমরাও জুবু থুবু হয়ে আছি। অবশ্য বাবা-মা সাথে নেয়া মুড়ির টিন থেকে মুড়ি খেয়ে রোজার সেহরি খেলেন। আর হ্যা, এখন যে কথা বলছি-এটা আসলেই মহান আল্লাহর রহমতে। কারণ সে রাতে আমার বেঁচে থাকার কথা ছিলনা। পূবাল ঝড়ের তাণ্ডবে আম গাছের ডালের আরো উপরেরটায় উঠতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। ভেসে যাচ্ছিলাম। কলাগাছের একটা পাতা ধরে ধীরে ধীরে আবার আম গাছে এলাম। কলা গাছটি কোথা থেকে ভেসে এসে আটকে ছিল। পেওচ্ছালে আবার চলে গেছে। এ বন্যা সম্পর্কে একটাই কথা। আল্লাহ যেনো মানুষকে এমন বিপদ না দেয়।
ভোলার সংবাদঃ-
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে কি দেখেছেন/আপনার ভূমিকা কি ছিল?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি তৃতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণীতে পা দিয়েছি। ওই সময়ের রেডিওর শ্লোগানগুলো মনে পড়ে, ‘জেলের তালা ভাঙ্গবো, শেখ মুজিবকে আনবো’ বা ‘জেলের তালা ভেঙ্গেছি, শেখ মুজিবকে এনেছি’। শ্লোগানগুলো আওড়াতে ভালো লাগতো। চরফ্যাশন বাজারে হিন্দুদের দোকান-পাট লুটের খবর শুনেছি। দেখেছি লুটের মাল নিয়ে লোকদেরকে যেতে। হিন্দুদের হত্যা করার খবর শুনেছি। তবে পাশে আমাদের হিন্দু ভাইদের সাথে আমাদের ছিল প্রতিবেশীমূলক সম্পর্ক। মনে পড়ে মদন মোহন রায় এর কথা। কানু লাল, অনিল, গোপাল আরো অনেকের কথা। আর খাকি পোষাকে কেউ এলেই মিলিটারী আসার আতংক তো ছিলই। তবে এলাকার গণ্যমান্যরা মুক্তিযুদ্ধে যে যার মতো সাহায্য করেছে। আকাশবাণীর গান শুনতাম। ভালো লাগতো। একটা নতুন দেশ হবে ভাবতেই পুলকিত হতাম। অবশ্য সে সময় হানাদারদের নির্যাতন বিষয়টা অতটা বুঝতাম না। পরে অবশ্য একটি গানের খাতায় মুক্তিযুদ্ধের গানগুলো কপি করেছিলাম। অনেকগুলো।
ভোলার সংবাদঃ-
সাংবাদিকতা করতে গিয়ে মজার কোন অভিজ্ঞতা মনে আছে কি?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
মজার ঘটনা অনেক আছে, তারমধ্যে একটি ক্ষেপানো কথার বিষয় মনে পড়ে। একবার অগ্রজদের সাথে বসে আছি। একপর্যায়ে একজন বলল, এই সাবধানে কথা কও, সাংঘাতিক আছে কিন্তু! যাই হোক একজন পরিচিত মানুষের নাম সাংঘাতিকও হতে পারে! বিষয়টি উপভোগ করলাম। আমি মুচকি মুচকি হাসছি- বাকীরাও হেসে ফেলল। পরিবেশ হালকা হলো।
ভোলার সংবাদঃ-
কিভাবে চরফ্যাশন প্রেসক্লাবের সাথে যুক্ত হয়েছেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
প্রেসক্লাব শব্দটি তখনো চরফ্যাশনে পরিচিত ছিল না। ১৯৭৬ সালের দিকে সাপ্তাহিক জাহানে নও পত্রিকার শিশু-কিশোর বিভাগের অনুপ্রেরণায় আমরা প্রথমত: চরমাদ্রাজ কেন্দ্রিক একটি শিশু-কিশোর গ্রুপ তৈরী করি। ‘অংকুর’ শিশু-কিশোর সংগঠন। ১৯৭৮ সালে দাখিল পরীক্ষা দেয়ার পর অবসর সময়ে এ কাজটি চরফ্যাশন কেন্দ্রিক করার চিন্তা করি। ইতিমধ্যে ভোলা চলে যাই পড়াশোনার জন্যে। সেখানে ভোলা প্রেসক্লাব’র অনেকের সাথে পরিচিত হই। পত্র-পত্রিকা বেশি থাকায় সেখানে থেকে সংবাদ ও লেখালেখি চর্চা বেড়ে যায়। চরফ্যাশনে একটা কিছু করা দরকার ভেবে ‘অংকুর’কে চরফ্যাশনে স্থানান্তর করি। তৎকালীন জনতা ব্যাংকের পাশের একটি ভবনের ছোট একটি রুমে কাজ শুরু করি। সেটা ছিল একটা অফিস ও মেসের সমন্বয়। অংকুরের সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকলো। শেষে পনের দিনের কর্মসূচী নিলাম। সংবাদ লেখার ধরণ, সাংবাদিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান-বুদ্ধি, কিছু টেকনিক, বিভিন্ন পত্রিকার মফস্বল পাতার নিউজের ধরণ, এসব নিয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেই। আমার উদ্যোগ ও তত্ত্বাবধানে হাবিবুর রহমান সেলিম, আমার ছোট ভাই ইদ্রিস মাদ্রাজী, জাহাঙ্গীর হোসেন মিন্টু, আজাদ আবুল কালাম, বাহাউদ্দনি জসিম সরমান, ইউসুফ আলী রাড়ী, আবদুল খালেক দুঃখী ও জাফর ইকবাল দুলুসহ ১২ জন অংশ নেয় এ প্রশিক্ষণে। ১৯৮২ সালের শেষ দিক। তৈরী হয়ে যায় একটি তরুণ গ্রুপ। যারা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করতে থাকে। এ ভাবেই ১৯৮২-১৯৮৩ সালের দিকে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘অংকুর’ হয়ে উঠে চরফ্যাশনের একটি সুন্দর শিশু-কিশোর সংগঠন। চরফ্যাশন থানা শিল্পকলা একাডেমী শাখার আয়োজনে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ‘অংকুর’ সদস্যরা। অংকুর এর দেখাদেখি আরো তিনটি শিশু সংগঠন চরফ্যাশনে শাখা খোলে। খেলাঘর (বর্তমান মেয়র বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ ভাইদের), ফুলকুঁড়ি, এবং কচিকাঁচার মেলা। তখন ভোলার প্রেসক্লাবের আদলে আমরাও চরফ্যাশনে কিছু একটা করার পরিকল্পনা করি। ইতিমধ্যে অংকুরের প্রশিক্ষিত তরুণ সাংবাদিকরা লেখালেখির পরিমাণ আরো বাড়াতে সক্ষম হয়। প্রয়োজন ছিল সাংবাদিকতার স্বীকৃতি, সাংবাদিকতার কার্ড। ১৯৮৩ সালের দিকে আমি অনেককেই সাহসী করে তুলি, আত্মবিশ্বাসী করে তুলি সাংবাদিকতার জন্য। আমার ছোট ভাই ইদ্রিস মাদ্রাজী তখন চরফ্যাশন আলীয়া মাদ্রাসার ছাত্র। সাপ্তাহিক জাহানে নও এর সংবাদদাতার কার্ড ওর হাতে। কিন্তু একজন বয়স্ক দরকার। তখন কথা বলি অনেকের সাথে, কেফায়েত উল্লাহ নজিব, শহীদুল ইসলাম মালতিয়া, চরফ্যাশন টিবি স্কুলের, গার্লস স্কুলের দু’একজনের সাথে, জামাল মহাজন, অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান সাহেবের সাথে। কিন্তু কাউকেই আর সাংবাদিকতায় আনতে পারিনি। তারা আমাদের অনুষ্ঠানে আসতো। কথা হল কেফায়েত উল্লাহ নজীব এর সাথে। তিনি রাজি হলেন। আমি ওনাকে লেখালেখি দেখালাম। শেষে ১৯৮৪ সালের প্রথম দিকে ঢাকার দৈনিক জনপদ এর কার্ড পাইয়ে দিলাম তাকে ‘চরফ্যাশন সংবাদদাতা’ হিসেবে। এরপর প্রেসক্লাব গঠনের একটা রূপরেখা দাঁড় করানো হল। কার্ডধারী দু’জন ছাড়াও অনেকেরই বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখা ছাপা হয়েছে। যারা পত্র-পত্রিকায় তাদের যে কোন লেখা প্রকাশিত হবার কাটিং জমা দিতে পারবে তাদেরকেই প্রেসক্লাবের সদস্য পদ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হল। কেফায়েত উল্লাহ নজিব, ইদ্রিস মাদ্রাজী এবং অন্যদের সাথে একাধিক ঘরোয়া বৈঠক হল। ইদ্রিসকে সভা আহবান করতে বলা হল। জরুরী কাজে ঢাকায় চলে এলাম। আহবান করা বৈঠকে সভাপতিত্ব করল গার্লস স্কুলের গোলাম সারওয়ার সাহেব। একটি কমিটি করা হল। প্রথম সভাপতি হলেন কেফায়েত উল্লাহ নজীব (দৈনিক জনপদ), সাধারণ সম্পাদক, ইদ্রিস মাদ্রাজী (সাপ্তাহিক জাহানে নও), সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হল জাহাঙ্গীর হোসেন মিন্টু, আজাদ আবুল কালাম হল অর্থ সম্পাদক, অফিস ও পাঠাগার সম্পাদক হাবিবুর রহমান সেলিম। পরবর্তী কালে এই হাবিবুর রহমান সেলিম দীর্ঘদিন প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিল। অবশ্য এরপর যারা সদস্য হয়ে এগিয়ে আসে তাদের মধ্যে আবুুল হাশেম মন্জু, নাছিউর রহমান শিপু ফরাজী, আব্দুল মান্নান মিয়াজী, মো.ইয়াছিন, মনির উদ্দীন চাষী, মো.মোসলেহ উদ্দিন, শাহ মতিন টিপু, আনজামুল আলম মুনির, এম.জি কিবরিয়া মুকুল, মো.হেলাল উদ্দিন, কামাল উদ্দিন সহ আরো অনেকে রয়েছে। অবশ্য পরবর্তীতে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের তথ্য প্রেসক্লাবেই সংরক্ষিত আছে। তো প্র্রশ্নের জবাবে বলতে হয়।
ভোলার সংবাদঃ-
চরফ্যাশন প্রেসক্লাব কত সালে গঠন করলেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
১৯৮৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারীতে মূলতঃ চরফ্যশন প্রেসক্লাব গঠিত হয়।
ভোলার সংবাদঃ-
চরফ্যাশন প্রেস ক্লাবের প্রথম সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
সভাপতি কেফায়েত উল্লাহ নজীব (দৈনিক জনপদ), সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস মাদ্রাজী (সাপ্তাহিক জাহানে নও)।
ভোলার সংবাদঃ-
চরফ্যাশন প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য সংখ্যা কত ছিল?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
সদস্য সংখ্যা ছিল ৬ জন, নির্বাহী সদস্য ৫ জন। আমি রয়ে গেলাম উপদেষ্টা হিসেবে।
ভোলার সংবাদঃ-
সাংবাদিকতা করে কি পেলেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
দুনিয়ার দৃশ্যত: কিছু পাবার জন্য সংবাদিকতা করিনি। তবে অনেক কিছু পেয়েছি। সম্মান, ভালোবাসা, আর একটি প্রজন্মকে প্রশিক্ষিত করে তোলার আনন্দতো আছেই।
ভোলার সংবাদঃ-
চরফ্যাশনের প্রথম সাংবাদিক হিসেবে আপনার অনুভূতি কি?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
ভালো লাগে। যখন ভাবি একটি জনগোষ্ঠীর মাঝে আমি প্রথম লেখালেখি করেছি, সংবাদ নিয়ে। তবে আমার অজান্তে হয়তোবা আমার চেয়েও গুণী সাংবাদিক ছিলেন, যাদেরকে আমরা তখন আবিষ্কার করতে পারি নি বা তারপরও।
ভোলার সংবাদঃ-
সাংবাদিকতা করে কোন পুরস্কার পেয়েছেন কি?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
সংবাদিকতার জন্যে পুরস্কার পাইনি। তবে স্বীকৃতি, সম্মাননা, সনদ পেয়েছি।
ভোলার সংবাদঃ-
অবসরে কি করেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
অবসরে লেখালেখি করি। বই অথবা পত্রিকা পড়ি।
ভোলার সংবাদঃ-
নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকরা কেমন করছে?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের প্রতি আমার খুব আস্থা আছে। আশা করি আমরা যা বছর বছরেও করতে পারি নি, তারা তা অল্পক্ষণেই উপহার দিতে সক্ষম হবে। তবে একটি কথা বলতেই হয়, এই পেশাটি একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা । কঠোর পরিশ্রম ছাড়া প্রতিষ্ঠা পাওয়া গেলেও এর মাধ্যমে সমাজকে কিছু দেয়া যায় না। পাশাপাশি আত্মপ্রত্যয়ের শক্তি তো থাকবেই। আর সব কিছর ওপর সৃষ্টিকর্তার দয়া এবং ইচ্ছা থাকা আবশ্যক।
ভোলার সংবাদঃ-
বর্তমান যুগে অনলাইন গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে আপনি কি ভাবছেন?
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
গ্লোবালাইজেশন বা বিশ্বায়নের এ যুগে অনলাইন গণমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তবে শিঘ্রই এর জন্য একটি অনুসরণযোগ্য নীতিমালা দরকার। নইলে অনলাইন গণমাধ্যমের বারটা বাজাতে একদল নীতিভ্রষ্ট লোকের অপকীর্তির জোয়ার ঠোকানো মুশকিল হবে। পাশাপাশি ‘একজন সৎসংবাদিকের বন্ধু নেই’ কথাটাও মাথায় রাখতে হবে। আল্লাহ আমাদের সহায়। শেষ করার আগে ভোলার সংবাদ ডট কমকে তাদের উদ্যোগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। ভবিষ্যতের নব নব প্রচেষ্টায় ভোলার সংবাদ ডট কম এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা করছি।
ভোলার সংবাদঃ-
আপনাকে অশংখ্য ধন্যবাদ।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনঃ-
আপনাকেও ধন্যবাদ।