মঙ্গলবার ● ২৬ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » সম্পাদকীয় » বাম্পার ফলন দাম পাচ্ছে না কৃষক
বাম্পার ফলন দাম পাচ্ছে না কৃষক
সম্পাদকীয় • খরচের চেয়ে বাজারে ধানের দান কম থাকায় কৃষক হতাশ। অনেক কৃষক দায়গ্রস্ত। তাদের স্বপ্ন ছিল ধান বেচে দেনা শোধ করবেন। কিন্তু ধানের বর্তমান দামে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তাদের। ধানের দাম না পেয়ে দেশের নানা স্থানে প্রতিবাদী হয়েছে কৃষক। সরকার খুশি এই বলে যে, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে সরকার কেন কৃষকেরই তো সব চেয়ে বেশি খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু সেই কৃষকের চোখে কেন পানি, কেন সে প্রতিবাদী, কেন সে হতাশায় নিমজ্জিত? কৃষক যখন রাস্তায় ধান ঢেলে প্রতিবাদ জানায়, বিক্ষোভ দেখায়, তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্যের জন্য আহাজারি করে তখন সরকারের ক্রেডিবিলিটি ফিকে হয়ে যায়। সরকারের সন্তুষ্টি প্রহসনে পরিণত হয়। এখন প্রশ্ন হলো— কৃষক কেন তার পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। কেন সে তার উৎপাদন খরচ কমাতে পারছে না? এ দু’টি মৌলিক প্রশ্নের সমাধান আদতে সরকারেরই হাতে এবং সরকারকেই এর বিহিত করতে হবে। আমরা জানি, আবহমানকাল ধরে এ দেশের কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করে চলেছে। খরা, বন্যা, শিলাবৃষ্টির মতো দুর্যোগের কবলে পড়ে তার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সে দমেনি। আবারও নতুন উদ্যমে আবাদে নেমে প্রকৃতিকে জয় করতে চেয়েছে। পেরেছে কিংবা হেরেছে। তাই বলে থেমে যায়নি তার কর্মের হাত। লাভ-লোকসানের হিসাবের বিষয়টি বরাবরই গৌণ বিবেচিত হয়েছে। সে কারণেই কৃষককে বলা হয়ে থাকে জাতির মেরুদণ্ড। কিন্তু তারপরও সরকার কখনই কৃষকের উন্নয়নের দায়িত্ব গ্রহণ করেনি। আজ দিন বদল হয়েছে। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির নানাবিধ ব্যবহার ঘটেছে, ঘটছে। বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ইত্যাদি উপকরণ এখন অনেকাংশেই সরকার ও ব্যবসায়ীদের হাতে। আবাদ মৌসুমে কৃষক এগুলো কম দামে পেলে তার উৎপাদন খরচও কমে আসে। বাম্পার ফলন হলে সরকার যদি ভর্তুকি দিয়ে তা কিনে নেয় তা হলে আর কৃষককে তার উৎপাদিত পণ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হয় না। ন্যায্য দাম না পেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাতে হয় না। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার আনন্দে সরকারের সঙ্গে কৃষকও শরিক হতে পারে।