শনিবার ● ১৫ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে যাত্রীদের জিম্মি: ৬০ টাকার ভাড়া ১৮০!
ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে যাত্রীদের জিম্মি: ৬০ টাকার ভাড়া ১৮০!
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে যাত্রীদের জিম্মি করে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত দ্বিগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ পথে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চট্টগ্রাম ও ঢাকায় যাতায়াত করে। কেউ প্রতিবাদ করলেই লঞ্চের কর্মচরীরা তাদের ওপর চড়াও হয়। ফলে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাটের দূরত্ব মাত্র ২৬ কিলোমিটার। এই রুটে সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়া কিলোমিটারে ২ টাকা ৩০ পয়সা হারে ৫৯ টাকা ৩০ পয়সা। কিন্তু যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ১৮০ টাকা। যা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তিন গুণ। এর আগে এ রুটের ভাড়া ছিল ১৫০ টাকা। নতুন করে তা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করেছে লঞ্চের মালিকপক্ষ। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় লঞ্চ মালিকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ নৌপথে মোট ১০টি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে রাকিন-২, আলমদিনা, জনতা, চন্দ্রদ্বীপ, উপকূল, উপবন, সঞ্চিতা, গ্রীনওয়াটার, সোহেলী ও মিলন এক্সপ্রেস। দোয়েল পাখি ও স্বর্ণদ্বীপ নামে আরো দুটি লঞ্চ অনত্র আছে।
সরেজমিনে গিয়ে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ ২১ জেলার মানুষের সহজ যাতায়াতের মাধ্যম এই নৌপথ। এ পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। এই সুযোগে লঞ্চের মালিকপক্ষ যাত্রীদের কাছ থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করছে। অথচ ইলিশা ঘাটের ১০০ গজের মধ্যেই একটি পুলিশ ফাঁড়ি ও একটি নৌ থানা রয়েছে। তাদের চোখের সামনেই নেওয়া হয় অতিরিক্ত ভাড়া।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই দীর্ঘদিন ধরে লঞ্চ মালিকরা দাপটের সঙ্গে বেশি ভাড়া আদায় করছেন। এর আগে এ নৌপথে ভাড়া নিত ১৫০ টাকা। একই রুটে ফেরিতে নেয় ৭০ টাকা। অবৈধ ট্রলার ও স্পিডবোটেও ভাড়া কয়েক গুণ বেশি। নভেম্বরে জ্বালানি তেলের মূল বৃদ্ধি পাওয়ার পরে জনপ্রতি ১৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
যাত্রীরা জানায়, লঞ্চের সিটে বসে, দাঁড়িয়ে, ওপরতলা, নিচতলা সবখানে ভাড়া ১৮০ টাকা করে নেওয়া হয়। প্রতিবাদ করলে লঞ্চের কর্মচারীরা জানান, মালিকপক্ষের আদেশ, ভাড়া কম নেওয়া যবে না।
ঘাটে কমর্রত লঞ্চের কর্মচারীরা জানান, এই রুটের লঞ্চ ব্যবসা খুবই লাভজনক। এই ব্যবসা করে অনেকে দুই থেকে তিন বছরে একাধিক লঞ্চের মালিক হয়েছেন। অনেকে একাধিক পুরাতন লঞ্চ ভাড়ায় এনে এই রুটে ব্যবসা করছেন। তবে তাঁদের কাছে মালিকদের নাম-পরিচয় বা মোবাইল নম্বর চাইলে দিতে অস্বীকার করেন।
-রাজ