

শুক্রবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলা রেকর্ডরুমের কাগজপত্রের অবস্থা নাজুক, দালালদের খপ্পরে প্রতারিত সেবা গ্রহণকারীরা
ভোলা রেকর্ডরুমের কাগজপত্রের অবস্থা নাজুক, দালালদের খপ্পরে প্রতারিত সেবা গ্রহণকারীরা
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলা রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ডরুমের অবস্থা খুবই জড়োসড়ো অবস্থায় রয়েছে। ফলে একদিকে সেবা প্রত্যাশীরা যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছে অন্যদিকে রেকর্ডরুমে কর্মরত সার্চারাও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। বছরের পর বছর ধরে এই সব কাগজ বিভিন্ন ফাইলে সংরক্ষিত রয়েছে। শত বছর আগের কাগজও এখানে রয়েছে। দীর্ঘ সময়ের কারণে বেশিরভাগ কাগজ ছেঁড়া পাতায় পরিণত হয়েছে। ফলে কোন একটি কবুলত,দলিল কিংবা জমি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কাগজ খুঁজে বের করা খুবই সমস্যাসঙ্কুল ব্যাপার। অনেক সময় খুঁজতে গেলে কাগজটি সম্পূর্ণ ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। আর এই ছেঁড়া কাগজের মধ্য থেকে কাঙ্ক্ষিত কাগজটি বের করা অনেকটা ডালে চালে মিশিয়ে বাছাই করার মতো অবস্থা হয়। এ-ই সুযোগে অফিসের অসাধু কর্মকর্তারা হাতিয়ে অতিরিক্ত টাকা। অন্যদিকে প্রতিনিয়ত রেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন এলাকার আলাউদ্দিন নামের এক দালালদের হাতে প্রতিরিত হচ্ছে সেবা গ্রহণকারীরা।
ভুক্তভোগী শহিদুল জানান, রেকর্ডরুমে পিট দলিলসহ কোন কাগজ পত্র উঠতে আসলে অফিসের অসাধু কর্মকর্তারা অতিরিক্ত টাকা নিয়েও মাসকে মাস তালবাহানা করে। অন্যদিকে অফিস সংলগ্ন আলাউদ্দিন ও তার ছেলেসহ একটি দালাল চক্র দ্রুত কাগজ পত্র উঠিয়ে দিবে বলে সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করছেন। কেউ তার প্রতিবাদ করলে আলাউদ্দিন ও দালাল চক্রটি তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হেরাজ হয়রানি করেন।
এ প্রসঙ্গে রেকর্ড কিপার আবুল কালাম আজাদ বললেন, এখানে একটি ডকুমেন্ট চেয়ে অনেকে তিন মাসেও পাচ্ছে না। হাজার হাজার জড়োসড়ো ফাইল এর মধ্য থেকে কাঙ্ক্ষিত ডকুমেন্ট বের করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তিনি এ সমস্যা দূর করার উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ফাইলগুলোকে যদি স্বাভাবিক ও সিস্টেম্যাটিকভাবে রাখা যেত ,তাহলে কেউ কোন ডকুমেন্টস চাইলে দু’একদিনের মধ্যেই তা তাদেরকে পৌঁছে দেয়া যেত।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি কার্যক্রমে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু হয়েছে। তাই জমিসংক্রান্ত অতি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংরক্ষণাগার রেকর্ডরুম এর কাগজপত্র সংরক্ষণ এর জন্য আশু ব্যবস্থা প্রয়োজন। প্রথমত বর্তমানে যেসব কাগজপত্র রয়েছে সেগুলোকে প্রয়োজনে ভালো কাগজে ফটোকপি করে সিস্টেমেটিক পদ্ধতিতে ফাইল আবদ্ধ করা প্রয়োজন। যাতে করে সিরিয়াল মতো ফাইল খুঁজলেই কাঙ্খিত ডকুমেন্ট পাওয়া যাবে। যদিও বিষয়টি খুবই কষ্টসাধ্য ও সময়ের ব্যাপার ,তবুও বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে এজন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়ে লোকজন খাটিয়ে কাজটি করা সম্ভব । আর এর স্থায়ী সমাধানের জন্য একদিকে ফাইলে কাগজপত্র সংরক্ষণ করা অন্যদিকে কম্পিউটারে সংরক্ষণটাই এখন সময় উপযোগী। এজন্য প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ করে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পুরানো ফাইলগুলোকে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যদিকে বর্তমানে যে সব ডকুমেন্টস তৈরি হচ্ছে সে গুলোকে কম্পিউটারাইজড অর্থাৎ ডিজিটাল সিস্টেমে সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা একান্ত প্রয়োজন। বিষয়টি একান্তভাবেই জনগুরুত্বপূর্ণ ।তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণকে নিত্য হয়রানি থেকে মুক্ত করা প্রয়োজন।
-এমএসজে/এফএইচ