শিরোনাম:
●   উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় ●   ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ●   ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ●   চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস ●   ডয়েসে ভ্যালী ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনিস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদকদের কর্মশালা সম্পন্ন ●   ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ●   ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ●   ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ●   ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ●   আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী
ভোলা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভোলার সংবাদ
মঙ্গলবার ● ৩০ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » জেলার খবর » শোষণ আর শাসনের দাসত্বে তজুমদ্দিনের চর মোজাম্মেলের মানুষ, পুলিশ ক্যাম্পের দাবি
প্রথম পাতা » জেলার খবর » শোষণ আর শাসনের দাসত্বে তজুমদ্দিনের চর মোজাম্মেলের মানুষ, পুলিশ ক্যাম্পের দাবি
৮৬৮ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ৩০ নভেম্বর ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

শোষণ আর শাসনের দাসত্বে তজুমদ্দিনের চর মোজাম্মেলের মানুষ, পুলিশ ক্যাম্পের দাবি

ফরহাদ হোসেন

এইচ এম নাহিদ, চর মোজাম্মেল থেকে ফিরে: শোষণ আর শাসনের দাসত্বে চলছে দ্বীপ জেলা ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন চর মোজাম্মেল। যে খানে নেই কোন রাষ্ট্রীয় প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা। শুধুই চলে কথিত কয়েক ডজন খানেক ব্লক নেতাদের মনগড়া বিচার কার্যক্রম। এ-ই চরের প্রায় ৩০ হাজার  দারিদ্র্য  ভূমিহীন ও অসহায়ত্ব যেন ব্রিটিশ শাসিত দাসত্বের আরেক পরাধীন জীবন ব্যবস্থা। চর মোজাম্মেল শোষণ, শাসন, নিপীরণ আর নির্যাতনের ভরা যা তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের একটি বিচ্ছিন্ন একটি দুর্গম এলাকা। যা এখনো সরকারি ভাবে গেজেট হয়নি। সেখানে  খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান এবং নিরাপত্তার মৌলিক অধিকার গুলো এখানে রুপকথার গল্পেরমত। ১৯৫০ সালে ভারতীয় উপমাহাদেশ থেকে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলেও একবিংশ শতাব্দিতে এসেও চর মোজাম্মেলে ১৭৯০ সালে আদলে গড়ে উঠা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পনীর প্রেতাত্বারা চরের ৩০ হাজার মানুষের উপর ভর করেছে। প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, লুটপাট, জবরদখলদারিরা একধরনের নিরব নৈরাজ্য কায়েম চলছে এখানে। স্বাধীনতার ৫১ বছরে এসেও পরাধীনতার  এক নিরব শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে পারেনি এখানের মানুষগুলো।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন থেকে ছিটকে পড়া মেঘনার কোল ঘেষে জেগে উঠা প্রায় সারে ৭ হাজার বর্গমাইলের একটি চর। ২০ বছরে পূর্ব এই চরে জীবন ও জীবিকার তাগিদে নোয়াখালী ও ভোলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা বসতী স্থাপন করেন। দেশের অর্থনীতির বিশাল সম্ভনাময় একটি বিস্তৃর্ণ এলাকা। সোনালী ফসল, পুকুরের মাছ গবাদী পুশুতে যেন থৈই থৈই করে। তার পরেও চরের মানুষের মনে সুখ নেই। চারদিকে যেন খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে নিরব সুনশান অবস্থা বিরাজ করছে। অপরিচিত কোন পর্যটক বা গণমাধ্যম কর্মীদের দেখলেই যেন একটু মুক্তির স্বপন দেখেন। কেউ কাছে আসেনা, চারদিকে তথাকথিত ব্লোক লিডারদের শকুনের দৃষ্টি। এই মানুষগুলোর মনের চাপা কষ্টগুলো বলাও যেন মহাপাপ। জোরপূর্বক বসত ঘরের ঢুকে বাবা মায়ের সামনে মেয়েদের ধর্ষণ আবার মেয়েদের সামনে মা’কে ধর্ষণ। অপহরণকরা, গোয়ালের গরু,ছাগল পুকুরের মাছ চোখের সামনেই নিমেষেই শেষ হয়ে যাওয়া। ১০ থেকে ১২ বছরের শিশুদের বিয়ে দিয়ে মা’বাবা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। তাই এই চরের মানুষ অত্যাচারীদের ভাষা জানলেও এখানে প্রতিবাদের ভাষা কেউ জানেনা বা জানতে চায়না।

চর মোজাম্মেলের (পরিচয় গোপনের শর্তে) ৭০ উর্ধ্বো বৃদ্ধা বলেন, চর মোজাম্মেল হইলো চেয়ারম্যানেগো কৈলজা। কুড়ি বছর হইল চর জাইগলো, ঝুড় জঙ্গলে ভরা আছিল, দুইডা ভাত পেডে দেওনের লাই সব ছাপ কইরা আবাদ করি,গরু, ছাগল, মুরকা পাইলা সুখে শান্তিতেই আছিলাম হঠাৎ কইরা খোদার ঠাডা পড়ছে এই চরে। নেতাগো বাহিনীগো কু-দৃষ্টির কারণে ঘরে ধান, চাউল, গরু, ছাগল রাখতে পারিনা। চরোত্তেন অগো ডরে ১০-১২ বছর হইলেই লেদা গেডি (নাবালিকা) মাইয়াগোরে তরে (তজুমুদ্দিনে) পাডাই দেই। জায়গা জমি নাই, হের লাইগ্গা চরে পইরা রইছি। বিচার দেওনের কোন যাগা নাই যদি একটা পুলিশ ক্যাম্প থাকতো তাইলে শেখ মুজিবের মাইয়ার লাই দোয়া করতাম। এমন আক্ষেপ নিয়েই কথাগুলো বলছেন।

চরবাসী আরো অভিযোগ করেন, প্রতি ব্লোকে বছরে দেড় লাখ টাকা করে চাঁদা দিতে হবে ব্লোক লিডারদের, গরু  ছাগল পুকুরের মাছ আবাদি জমি ও বসতঘর বিক্রি করলে প্রতি লাখে হাজার ৩০, প্রতিবাট ( ১১৯ শতাংশ জমি) চাষাবাদে ২ হাজার ৫’শত টাকা, জমি চাষে টিলার প্রতি ৫ হাজার টাকা, প্রতিমণ ধানে ৪ কেজি, ধান মড়ানি ৩ কেজি হারে চাঁদা দিতে হবে। এছাড়া এক বাটে মসজিদের নামে ৪ হাজার ৫’শত করে চাঁদা দিতে হবে। ধর্ষণ, জমিজমার বিরোধ, মনমালিন্যর শালিশ প্রতি ১০ হাজার টাকা অগ্রীম জমা দিতে হবে। এখানে আইনের কোন শাসন নেই। চেয়ারম্যান কর্তৃক নিদৃষ্ট ব্লোক লিডাররাই চরের আইন আদালত। তাদের মুখের বাণীই আইন হিসেবে মানা হয়। এই ধরনের ৩৬ জন ব্লোক লিডার আছেন চরে। তার মধ্যে অজিউল্লাহ ফরাজী (৬৫), হান্নান ফরাজী (৪০), ইদ্রীস সারেং (৫৫)  নিরব লিডার (৫০) , ছালাউদ্দিন লিডার (৫০), আব্বাস লিডার (৫৫), দুধর্ষ আব্বাস হাং (৬০), রুহুল আমিন লিডার (৫০), হেলাল লিডার (৬০),ইমান হোসন টুনু (৫৫),আলাউদ্দিন খলিফা (৬০) , আনোয়ার নেতা(৪৫), শরীফ নেতা(৪৫) অন্যতম। এরা বছরের চর মোজাম্মেল থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার চাঁদা তোলার বন্দোবস্ত নেন চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে। তাছাড়া চেয়ারম্যান ও তার ব্লোক লিডাররা সরকারি গুচ্ছগ্রামের প্রায় ৩৮ টি পুকুর থেকে গুচ্ছগ্রামের উপকার ভোগীদের উৎখাত করে নিজেরাই ভোগ করছেন।

কথাগুলো অকপটে শিকার করেন, দর্জি কান্দি ও হানু হাওলাদার ব্লোকের সিরাজ (৪০) ও গিয়াসউদ্দিন (৩৫)। তারা বলেন, কৃষকের ফসল,জমির চাঁদা,ধর্ষণের বিচার, গুচ্ছগ্রামের পুকুরের মাছ চেয়ারম্যান ও তার নির্ধারিত ব্লোক লিডারদের মাঝে বন্টন করা হয়। এখানে কেউ টু শব্দও করতে পারেনা। করলেই চর থেকে উৎখাত করা হয়।

এখানে ধর্ষণকে মহাব্বত বলা হয়। ৫ ও ৭ বছরের শিশু ধর্ষণকারি ইসলামের (৭০) সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ধর্ষণ বলেন ক্যান বায়াজি (বাবাজি) এইটাকে মহাব্বত বলেন।

ধর্ষণের সালিশ করেন ব্লোক লিডাররা। ধর্ষকের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করে নিজেরা ভাগ বাটোয়ারা করে খান, ধর্ষিতা ও তার পরিবারের জন্য কোন পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করা হয়না। ব্লোক লিডাররা নিজেরা ধর্ষণ ও লুটপাট করলে কোন বিচার হওয়ার সুযোগ থাকেনা।

প্রকৃতিক দুর্যোগে সরকারি ত্রাণ,ভিজিডি,ভিজিএফ,বয়স্কভাতা,বিধবা ভাতা,মাতৃকালিন ভাতা, দুগ্ধকালিন ভাতা এই চরের মানুষের কাছে পৌছায় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে খেটে খাওয়া মানুষের সাথে এই প্রতিবেদক আলাপ করলে তারা বলেন, দুইডা ঢাইল ভাত খাইয়া বাঁইচা থাওনের লাই এই চরে আছি। এক যুগ ধইরা ব্লোক লিডারেগো অত্যাচার সইতাছি। অনেক কষ্টকরে এই চরডারে পরিস্কার করছি। কোথাও যাওনের যায়গা থাকলে অনেক আগেই চইলা যাইতাম। চরে একটা পুলিশ ক্যাম্প হইলে মনে অয় খানিকটা নিস্তার পাইতাম।

এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয় ব্লোক লিডার অজিউল্লাহ ফরাজী, ইমান হোসেন টুনু, ইদ্রিস সারেং এর সাথে, তারা বলেন, চরের বিষয়ে চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নেন, আমরা সেটাকে বাস্তবায়ন করি, যেটা পারিনা সেটা চেয়ারম্যান নিজেই করেন।

কথা হয় চাঁদপুর ইউপি চেয়রম্যান সহিদুল্যাহ কিরনের সাথে তিনি তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যত পারেন নিউজ করেন আমি চর মোজাম্মেলে কোন অন্যায় করিনা। তাছাড়া আমার ভাল মন্দের বিচার করবেন আমার এমপি অন্য কেউ নয়।

-এফএইচ





জেলার খবর এর আরও খবর

উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায়
ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত
ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময়
চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস
ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ!
ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী
ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী
ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হলেন ভোলার তানভীর শিকদার, বিভিন্ন মহলের অভিনন্দন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হলেন ভোলার তানভীর শিকদার, বিভিন্ন মহলের অভিনন্দন

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

© 2024 দ্বীপের সাথে ২৪ ঘণ্টা Bholar Sangbad, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।