বুধবার ● ৭ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » জেলার খবর » লালমোহনে মাঠে গরুর হাট বসার আগেই ছুটি হয় বিদ্যালয়!
লালমোহনে মাঠে গরুর হাট বসার আগেই ছুটি হয় বিদ্যালয়!
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহনের চতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গত ২০ বছর ধরে নিয়মিত বসছে গরু-ছাগলের হাট। এতে করে দুর্গন্ধের কারণে ছাত্র/ছাত্রী ও শিক্ষকদের পাঠদানে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে।সপ্তাহের প্রতি রবি ও বুধবার দুপুর ৩ টা থেকে হাট বসানোর কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রতিষ্ঠান ছুটি হয়ে যায়। মাঠে গরুর হাট বসানোর কারণে মাঠটিতে খেলাধুলা করতে কষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। খেলার মাঠটি গরুর মল-মূত্রে আর কাঁদায় ভরে থাকে সব সময়। এজন্য শিক্ষার্থীরা সেখানে খেলাধুলা করতে পারেনা। এসকল কারণে হাটের দিনে নিদিষ্ট সময়ের আগে বিদ্যালয়টি ছুটি দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৬ শতাধিক। চতলা বাজার সংলগ্ন এই বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়টি সংলগ্ন রয়েছে আরেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যার শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক। বিগত ২০ বছর আগে এই গরুর হাটটি বাজারের ভিতরে ছিলো। পরে বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীদের সমস্যার কারণে তা সরিয়ে আনা হয় এই বিদ্যালয়ের মাঠে। যা আজও চলছে হরহামেশে। বিদ্যালয়ের সামনে খেলার মাঠে এই গরু ছাগলের হাট বসানোর কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়। এবং বর্ষা মৌসুমে মাঠে সারাক্ষণ কাঁদা জমে থাকে। যার কারণে শিক্ষার্থীরা মাঠ দিয়ে চলাচল করতে পারছেনা। চতলা এলাকায় এটিই একমাত্র খেলার মাঠ। গরুর হাটের কারণে বছরের অর্ধেক সময় মাঠটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পরে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক, মাসুম, শাকিল, সজিব অভিযোগ করেন, মাঠে গরুর হাট বসানোর কারণে তাদের খেলাধুলা করতে অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া গর্ত ও কাঁদায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। গরুর বর্জে ক্লাসরুম ও বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস দুর্গন্ধময় ও নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি করে । তাই তারা দ্রুত বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে গরুর হাট সরানোর দাবী দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, ইজারাদার বজলু পঞ্চায়েত প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি তার মন মতো বিদ্যালয়ের মাঠে গরুর হাট যাচ্ছেন। কেউ তার প্রতিবাদ করে তাকে বিভিন্নভাবে তাকে হেনস্থা করা হয়।
চতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আঃ হাই বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে গরু ছাগলের হাটটি অনেকদিন থেকেই বসছে। বিষয়টি আমি এর আগের উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে লিখিতভাবে অবগত করেছিলাম কোনো প্রতিকার হয়নি। বিদ্যালয় মাঠ থেকে গরু ঘাটতি অন্যত্র সরিয়ে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ফেরানোর দাবি জানাচ্ছি।
চতলা বাজারের ইজারাদার মোঃ বজলু পঞ্চায়েতের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব না হলেও তার সহযোগী ইজারাদার কামাল শনি বলেন, বাজারের নির্দিষ্ট গরুর হাটের জায়গা না থাকায় তারা স্কুল মাঠে বসাচ্ছেন এবং ইজারার টাকার অংশ থেকে স্কুল সংলগ্ন মসজিদে কিছু টাকা দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের যে খেলাধুলার অসুবিধা না হয় তার জন্য পরিষ্কারের ব্যবস্থা করছি।
এবিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি বলেন, আমি বিষয়টি এখনি জানতে পারলাম। যত দ্রুত সম্ভব গরুর হাটটি অন্যত্র সরিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।
এছাড়াও আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে লালমোহনের চতলামোহাম্মদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের মাঠেও বসেছে গরু-ছাগলের হাট। যার কারণে ওই সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। তারা খেলাধূলা থেকে শুরু করে মাঠে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদ্যালয় মাঠে এসকল হাট বসাচ্ছেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। যাদের এই নোংরা প্রভাবের কারণে নষ্ট হচ্ছে বিদ্যালয়গুলোর পরিবেশের মান। অতি দ্রুত উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় মাঠ থেকে গরু-ছাগলের হাট অপসারনের দাবী করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
-এমআরপি/এফএইচ