বুধবার ● ২২ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » জেলার খবর » লালমোহনে নিয়ম বহির্ভূতভাবে দাখিল মাদ্রাসার সুপারকে ফাজিলের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগে তোলপাড়
লালমোহনে নিয়ম বহির্ভূতভাবে দাখিল মাদ্রাসার সুপারকে ফাজিলের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগে তোলপাড়
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহনে এক ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়োগে মাদ্রাসা বোর্ডের নিয়ম নিতিকে তোয়াক্কা না করে মোটা অংকের উৎকোষের বিনিময় নিয়ম বহির্ভূতভাবে অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় উপজেলার মাদ্রাসার শিক্ষক মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪/১২/১৮ ইং তারিখে উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়ানের চতলা হাশেমিয়া মাজেদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওঃ মো. ইয়াছিনের মৃত্যুতে অধ্যক্ষ পদটি শূন্য হয়।
তার পর থেকে মাদ্রাসার সভাপতি মামুন উর রহমান চৌধুরী মোটা অংকের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা উৎকোষের বিনিময় অধ্যক্ষ পদে সম্পুর্ণ নিয়ম বর্হিভূতভাবে একই উপজেলার হাজির হাট টি এ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওঃ আবু জাফর মোহাম্মদ মাঈনুদ্দীনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য সকল প্রকার কার্যক্রম শুরু করেন। তার ধারাবাহিকতায় গত ৪ মার্চ ১৯ তারিখে গোপনভাবে ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক প্রত্রিকায় সরকারী বিধি ২০১৮ অনুযায়ী চতলা হাশেমিয়া মাজেদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার জন্য একজন অধ্যক্ষ আবশ্যক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এবং জাল জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষার সকল প্রকার কাগজ পত্র তৈয়ারি করেন। যোগসাজেসে কয়েকটি দাখিল মাদ্রাসার সুপারদেরকে অযোগ্য প্রার্থী দেখিয়ে সভাপতির পছন্দের প্রার্থী হাজিরহাট টি এ দাখিল মাদ্রাসার বির্তকৃত সুপার মাওঃ আবু জাফর মোহাম্মদ মাঈনুদ্দীনকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ চুড়ান্ত করেন।
সূত্র জানায়, বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) ২০১৮ ইং সালের নীতিমালা অনুযায়ী একজন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হতে হলে কমপক্ষে আলিম মাদ্রসার অধ্যক্ষ হিসেবে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়াজন রয়েছে। এছাড়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়োগ করতে হলে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বরারব চিঠি দিতে হবে এবং আরবি বিশ্ব বিদ্যালয়ের মনোনিত একজন প্রতিনিধি ওই অধ্যক্ষ নিয়োগ বোর্ডের সদস্য করতে হবে। কিন্তু ওই নিতিমালাকে তোয়াক্কা না করে দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবু জাফরকে ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ চুড়ান্ত করা হয় ।
সরকারী নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে আইনের চোখে বৃদ্ধাঙ্গলী দিয়ে অবৈধ ভাবে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগের কাজ তড়িগড়ি করে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদ সমাপ্ত করলেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এমনপ্রশ্ন উপজেলার মাদ্রাসার শিক্ষক মহলে?
দাখিল মাদ্রসার সুপার থেকে ফাজিল মাদ্রাসর অধ্যক্ষ এর নিয়োগে চুড়ান্ত হওয়া মাও: আবু জাফর মোহাম্মদ মাঈনুদ্দীন বলেন, তিনি বৈধ ভাবে নিয়োগ পেয়েছেন এমনটা দাবি করলেও এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হয়নি।
এব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মামুন উর রহমান চৌধুরী উৎকোষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তার মাদ্রাসাটি আলিমের এমপিও রয়েছে। তাই তিনি আলিম এর কোটায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়োগ করেছে। ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হবে পত্রিকা প্রকাশ করেছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং নিজেকে ব্যস্ত বলে আর কোন বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক একাধিক ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষরা জানান, চতলা হাশেমিয়া মাজেদিয়া ফাজিল মাদ্রাসাটি গত ৫ বছর ধরে বোর্ডের স্বীকৃতি প্রাপ্ত ফাজিল মাদ্রাসা হিসাবে সকল প্রকার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে ফাজিলের এমপিও না থাকলেও অধ্যক্ষ নিয়োগ ফাজিল মাদ্রসার বিধি নিয়ম অনুসারে বৈধ হবে। এখন যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সরকারী নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে অবৈধ ভাবে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তড়িগড়ি করে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ডিজির প্রতিনিধি ছিলেন তিনিই বিষয়টি ভালো জানেন বলে এড়িয়ে যান।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ডিজির প্রতিনিধি জাকিরুল হক বলেন, গত ২১ মে সেখানে নিয়োগ বোর্ড বসানো হয়েছে। যথা সময়ে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত না হওয়ায় আমি সেখান থেকে চলে এসেছি। এই নিয়োগে যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তা হলে বিষয়টি উপরস্ত মহলে অবগত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-এমআরপি/এফএইচ