সোমবার ● ৬ আগস্ট ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর » লালমোহন হাসপাতালে ডাক্তার সঙ্কটে রোগীদের ভোগান্তি
লালমোহন হাসপাতালে ডাক্তার সঙ্কটে রোগীদের ভোগান্তি
লালমোহন প্রতিনিধি: হাসপাতালে ডাক্তার সংকটের কারনে চিকিৎসা সেবা প্রত্যাশী রোগীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এখানে কোন মেডিকেল অফিসার নেই। যার কারনে ইনডোর, আউটডোর ও ইমার্জেন্সিতে ডাক্তার পাওয়া যায় না। তজুমুদ্দিন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং বোরহন উদ্দিন থেকে ডাক্তার মোঃ মমিনুল হাসান হিমেল ডেপুটেশনে সেবা দিচ্ছেন। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে টিএস, একজন ডেন্টাল, তিন জন কনসালট্যান্ট, ডেপুটেশনে দুই জন রয়েছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। জরুরি বিভাগে কোন ডাক্তার পাওয়া যায়না। সেখানে সেবীকারাই ডাক্তারের ভুমিকায় থাকেন।
জরুরি বিভাগে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ রোগীদের নানাবিধ ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে হয়। এ হাসপাতালে ডাক্তার আসলেও পুরাতন কিছু স্টাফের জ্বালাতনের কবলে পড়ে চলে বাধ্য হন নতুন ডাক্তাররা। এসকল স্টাফরা নিজেদেরকে ডাক্তার বলে চালিয়ে দেন। বর্তমানে টিএস ডাক্তার আঃ রশিদ নিজেই ঠিকমত ডিউটি করেন না।তিনি হাসপাতালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ডাক্তার ও জনবল সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে বলে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের অভিযোগ।
ডাক্তার আঃ রশিদ সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন। বাকি সময় তিনি থাকেন না। তবে সেকমো আবুল হোসেনের মাধ্যমে খবরাখবর আদান প্রদান করেন বলে জানা যায়।
হাসপাতালে আবুলের রামরাজত্ব চললেও দেখার কেউ নেই। নিজের মনমত ওষুধ লেখা, অতিরিক্ত অর্ত আদায়, রোগী হয়রানি, স্টাফকে মারপিট করাসহ হেন কোন অনিয়ম ও অপরাধ নেই যা আবুল হোসেন করেনা। বর্তমান টিএস‘র আমলে হাসপাতালে জরুরী বিভাগে ও ভর্তি থাকা চিকিৎসাধীন রোগীর চিকিৎসা সেবার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি বলে অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে যা হাসপাতালের রেকর্ড খতিয়ে দেখলে পাওয়া যাবে। তবে সুচতুর টিএস রেকর্ড বিলুপ্ত করতে পারেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ওয়ার্ডের রোগী পরিদর্শন ঠিকমত হচ্ছে না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। আগে দিনে কমপক্ষে দুইবার সকালে ও রাতে ডাক্তার ওয়ার্ডের রোগী দেখতেন। কয়েকদিন ধরে ব্যতিক্রম। ডেপুটেশনে আসা দুইজন মেডিকেল অফিসার টানা ডিউটি করতে হয়। আর এ কারনে চিকিৎসা সেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, রোগীর সেবা এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লালমোহন হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে কয়েকজন নার্স ও কমপক্ষে ১০/১২জন মেডিকেল অফিসার একান্ত প্রয়োজন। টিএস‘র আন্তরিকতার অভাবে লালমোহন হাসপাতালে রোগী সেবা বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে টিএস ডাঃ আঃ রশিদ হাসপাতালে নিজের অনুপস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেন, মাঝে মধ্যে আমি আমার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাই। তবে সেখানে যাওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে আগে থেকেই জানিয়ে রাখি। এ কারনে আমার অনুপস্থিতিতে সেকমো দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
সেকমো আবুল হোসেনের বিষয়ে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন অনিয়ম ও অপরাধের অভিযোগ পেয়েছি। এসব বিষয়ে তাকে সতর্ক করা হয়েছে। এরপরেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডাঃ আঃ রশিদ বলেন, লালমোহন হাসপাতালে জনবল সংকট রয়েছে। হাসপাতালের সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে।এ বিষয়ে ভোলার সিভিল সার্জন রতীন্দ্রনাথ বলেন, আমি মনে করি এটি কৃত্রিম সংকট। আমরা এসব বিষয়ে অবহিত আছি। লালমোহন হাসপাতালের টিএস ডাঃ আঃ রশিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এসেছে তা আমরা খতিয়ে দেখব। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-এনএ/এফএইচ