

বুধবার ● ১১ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » জানা অজানা » ভারতে চিকিৎসা ও ভ্রমনে আর আর হেল্প লাইন
ভারতে চিকিৎসা ও ভ্রমনে আর আর হেল্প লাইন
আরিফুল ইসলাম রিয়াজ •
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে রোগ দেন এবং তিনিই আরোগ্য দান করেন। এক্ষেত্রে ঔষধ খাওয়া সুন্নত। আমাদের দেশে অনেক ভালো ভালো চিকিৎসক রয়েছে। কিন্তু সুচিকিৎসা পাওয়ার আশা যখন আমরা দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে হারিয়ে ফেলি তখন জটিল ও কঠিন রোগের জন্য বিদেশে চিকিৎসা করার চিন্তা ভাবনা করি। সুচিকিৎসার জন্য অনেকেই এখন ভারতে পাড়ি জমান। আপনি যদি চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে চান তবে আপনাকে কয়েকটি বিষয়ে ধারণা নিতে হবে। আর ভারতে চিকিৎসা ও ভ্রমনের জন্য সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করছেন ভোলার আর আর হেল্প লাইন। চিকিৎসা সেবার জন্য ভারতে অনেকগুলো হাসপাতাল রয়েছে। তবে বাংলাদেশিরা ভারতের তামিল নাড়– প্রদেশের চেন্নাই এ অবস্থিত এপোলো হাসপাতাল, ভেলোরের সিএমসি ও বেঙ্গালুরুতে নারায়না হাসপাতালেই বেশী যেয়ে থাকেন। মূলত অর্থ এবং রোগের ধরণ বুঝে হাসপাতাল নির্ধারণ করতে হয়। যেমন বৃত্তবান ও যাদের হাতে বেশী সময় নেই তারা চেন্নাই এর এপোলো হাসপাতালে গিয়ে স্বল্প সময়ে অধিক খরচে চিকিৎসা সেবা নিয়ে আসনে। আর তুলনামূলক যাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা কম তারা ভারতের ভেলোরে অবস্থিত খ্রিস্টান মেমোরিয়াল কলেজ (সিএমসি) হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে যান। আর বিশেষ করে হার্টের রোগীরা ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে অবস্থিত নারায়না হাসপাতালে ডাঃ দেবী প্রসাদ শেঠীর নিকট চিকিৎসা সেবা নিতে যান। তবে বাংলাদেশীরা ভারতের ভেলোরে অবস্থিত খ্রিস্টান মেমোরিয়াল কলেজ (সিএমসি) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। ১৯০০ সালে ভারতের তামিল নাড়–র ভেলোরে সিএমসি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। যুগে যুগে হাসপাতালটির নীতি নৈতিকতা ও চিকিৎসা সেবা প্রধান, সঠিক রোগ নির্নয় এর কারনে এই হাসপাতালটি এশিয়ার মধ্যে অন্যতম। আপনি যদি আগে কখনো ভারতে না গিয়ে থাকেন তবে প্রথমে আপনাকে পাসপোর্ট করত হবে। আপনি মনে রাখবেন আপনি যে কাজটিই করুন না কেন সেই কাজ সম্পর্কে আপনাকে আগে ধারনা নিতে হবে। না হয় কাগজ পত্রে ভুল হয়ে গেলে আপনি সমস্যায় পড়তে পারেন। পাসপোর্ট করার পর আপনাকে ভারতের যে হাসপাতালে ডাঃ দেখাতে যেতে চান সে ডাঃ এর এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এরপর মেডিকেল ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসার আবেদন অনলাইনে করতে হয়। এরপর আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করে সাথে ডাঃ এর এ্যাপয়েন্টমেন্ট, ভোটার আইডি কার্ড, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বিদ্যুৎ বিল এর কাগজ, নাগরিকত্ব সনদ, পেশা সম্পর্কিত সনদ, পাসপোর্ট এর ফটোকপি, বাংলাদেশী ডাঃ এর প্রেসক্রিপশন ও টেস্ট এর কাগজ পত্রের ফটোকপি দাখিল করতে হবে। সাথে অরিজিনাল কপিও রাখতে হবে। আপনি যদি কঠিন ও জটিল রোগে আক্রান্ত হন তাহলে আপনার সাথে একজন এটেনডেন্ট নিতে হবে। তাছাড়া ভারতে যেতে হলে সাথে কাউকে নিয়ে যাওয়া ভালো। ভিসার আবেদন জমা দিতে পারবেন বরিশালে। অমৃতলাল রোডে অবস্থিত স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার এজেন্ট ভিসার আবেদন গ্রহণ করেন। সকাল ৭টা থেকে লাইনে দাড়িয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত আবেদন জমা দেয়া যায়। শুক্র,শনি ও সরকারী ছুটির দিন বন্ধ থাকে। ভিসা ফি ৭২১ টাকা। ৭দিন পরে আপনি যখন পাসপোর্ট সহ ভিসা পেয়ে যাবেন তখন ভারতে যাওয়ার অনুমতি মিলবে। ভারতে যেতে পারেন বিভিন্ন মাধ্যমে যে বাসে করে যশোরের বনাপাল হয়ে অথবা বিমান যোগে ঢাকা থেকে সরাসরি কোলকাতা অথবা চেন্নাই। বাসে যেতে হলে বরিশালের নথুল্লাবাদ থেকে কয়েকটি পরিবহন বেনাপোল যায়। যেমন এমএম, জিএম, চাকলাদার পরিবহন। ভাড়া ৩৫০ থেকে ৫০০টাকা। বেনাপোল চেকপোস্ট খোলা থাকে সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এখানে জেনে রাখা প্রয়োজন বাংলাদেশ চেক পোস্টের কাছাকাছি পৌঁছালেই আপনি দালালের খপ্পরে পড়বেন। কোন দালালের কথায় কান না দিয়ে প্রসেস মত চেক পোস্ট পার হয়ে যাবেন। আপনি সাথে করে এক লক্ষ টাকা নিয়ে যেতে পারেন। ভারতে পৌঁছে বাংলাদেশী টাকা গুলো রুপিতে পরিবর্তন করতে পারবেন। এরপর বাস বা ট্রেনে করে হাওড়া থেকে ভারতের শীয়ালদহ রেল ষ্টেশনে পৌঁছাতে পারবেন। ট্রেনের ভাড়া মাত্র ২০টাকা। দু ঘন্টার এই জার্নিতে আপনি ভারত সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারবেন। এরপর কোলকাতা থেকে বিমানে চেন্নই অথবা ট্রেনে চেন্নাই হয়ে ভেলরে যেতে পারবেন। কোলকাতা থেকে চেন্নাই বিমান ভাড়া ছয় হাজার থেকে ৭হাজার টাকা। আর ট্রেনে লাগবে ৩হাজার থেকে ৪হাজার টাকা। চেন্নাই এপোলো হাসপাতালের বিপরীতে অনেকগুলো থাকার লজ/হোটেল পাবেন। সেখানে কমপক্ষে ৩দিনের ভাড়া অগ্রিম পরিশোধ করতে হয়। হোটেল ভাড়া ৫শ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। সেখানকার খাবার আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। তাই হোটেল কর্তৃপক্ষ আপনার সুবিধার জন্য সিলিন্ডার গ্যাস, চুলা, হাড়ি পাতিল মজুদ রাখবে। আপনি ইচ্ছে করলে রান্না করে খেতে পারেন। অপরদিকে যদি ভেলরের সিএমসি হাসপাতালে যান তাহলে সেখানকার হোটেলেও একই ব্যবস্থা। আপনাকে স্থানীয় থানায় পুলিশ রিপোর্ট করতে হবে। আর এ জন্য সাথে করে পাসপোর্টের ফটোকপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি সঙ্গে রাখবেন। চেন্নাই বা ভেলোরে ডাঃ দেখাতে গেলে সেখানকার সবাই হিন্দি অথবা তামিল ভাষায় কথা বলবে। এখানে মজার এবং বিরক্তিকর বিষয় হলো এই যে তারা বাংলা বলা ও বুঝতে পারলেও আপনার সাথে বাংলায় কথা বলবে না। এমনকি কোলকাতার অনেকেই বাংলা বলতে পছন্দ করেন না। সর্বপরি ভারতে ভ্রমন বা চিকিৎসা করাতে গেলে আপনাকে অভিজ্ঞ কারো সহযোগীতা নিতে হবে। আপনাকে সব ধরনের সহযোগীতা দিতে পারে ভোলার আর আর হেল্প লাইন। আর আর হেল্প লাইন আপনাকে পাসপোর্ট করা, ভিসা প্রসেস, ভারতের ডাঃ এর এপয়েন্টমেন্ট, রেল বা বিমানের টিকেট, হোটেল বুকিংসহ সব ধরনের সেবা ও পরামর্শ দিচ্ছে। আর আর হেল্প লাইনের কর্ণধার মোঃ হোসেন একজন মানবাধিকার কর্মী। তরুন এই মানবাধিকার কর্মী মানবতার সেবায় কাজ করার জন্য আর আর হেল্প লাইন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, তিনি নিজে যখন ভারতে চিকিৎসা নিতে যান তখন নানান সমস্যায় পরেন এবং সেখানে তাকে এক মাসেরও বেশি সময় অবস্থান করতে হয়। তাই তিনি আমাদের দেশের রোগীরা যাতে ভারতে গিয়ে সহজে ও কম খরচে চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন সেজেন্য আর আর হেল্প লাইন প্রতিষ্ঠা করেন। সহযোগীতার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন এই নাম্বারে ০১৭১২৮৫১৬৪১।