বুধবার ● ৩০ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » পাঠকের মতামত » পাঠকের মতামত: আপনি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক ও আ’লীগের নেতা, এতোটা নির্দয়, নির্মম হলেন কি করে?
পাঠকের মতামত: আপনি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক ও আ’লীগের নেতা, এতোটা নির্দয়, নির্মম হলেন কি করে?
মোস্তাক আহম্মেদ শাহিন: আসার সালাম জানুন। আপনার সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় যেহেতু নেই সেহেতু কোন দিন কোন কালে কিছু নিয়ে কোন রকম শত্রুতা বা মিত্রতা ও নেই। আপনি আমাকে নিয়ে প্রথম আপনার এফবিতে লিখে ছিলেন? নাহ। খারাপ কিছু লিখেননি। আমিও আপনার প্রতি কোন রাগ,বিরাগ বা অনুরাগে এ লিখা লিখছিনা। আপনি যদি আ‘লীগের নেতা না হতেন কিংবা আপনি যদি বোরহানউদ্দিনের প্রেসক্লাবের সভাপতি না হতেন তবে অনেক কিছুর মতো নারীর প্রতি আপনার এমন সহিংসতার ব্যাপারটা অনেক ঘটনার মতোই এড়িয়ে যেতাম। যেহেতু আমি আ‘লীগের একজন নগণ্য কর্মী এবং সামান্য লিখা লিখির সুযোগে ভোলা প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ আমাকে ও তাদের সাথে দয়া করে অন্তর্ভুক্ত করেছেন প্রায় এক যুগ আগেই সেই দায় থেকে আমার এই লিখা।
কামরুল ভাই, আমি জানিনা কথাটার সাথে বাস্তবতার ফারাক কতো? তবে আমার শ্রদ্ধেয় নেতা বর্তমান সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী জনাব তোফায়েল আহমেদ এমপি তার বক্তৃতায় প্রায়শই বলতেন ” ক্ষমতা আর ফাঁসির মঞ্চ কাছা কাছি“! আমি সেই কথাটা মনে করে ভীত শংকিত। নিন্মের ছবিটি দেখে ই হয়তো আপনি চিনেছেন তাকে। বুঝেছেন ঘটনা কি? তদুপরি পাঠক তৃষণা নিবারনে আমি একটু তুলে ধরি বিস্তারিত। আপনি কিছু মনে করবেন না।
স্বয়ং আপনার বেত্রাঘাতে নির্যাতীতার নাম মিসেস সুফিয়া বেগম (২৭) তার স্বামীর নাম মোহাম্মদ কুদ্দুস, গ্রাম মুলাইপত্তন, ইউনিয়ন টবগী, বোরহানউদ্দিন। আপনার সাম্রাজ্য টবগী। যেখানকার আপনি জনপ্রতিনিধি। আপনার ভাষায় জনগণের ভোটে (?) নির্বাচিত হইছেন সে সাম্রাজ্যের ই সামান্য গরীব কৃষক দস্পত্তি। জায়গা জমির বিরোধ তাদের পারিবারিক। মহিলার ভাসুরপক্ষ ই আপনার কাছে নালিশী দরখাস্ত করলে আপনি চৌকিদার পাঠান তাদের ধরে আনতে। তারা প্রথম তারিখ শালিসে উপস্থিত হয়নি।
তাদের ভাষা ভয়েই তারা পালিয়ে ছিলেন। তদুপরি ধরেই নিলাম তারা আপনার নির্দেশ না মেনে মহা অপরাধ করেছে। কিন্তু পরে তো ঠিকই হাজির হইছিল আপনার দরবারে। জায়গা জমি সংক্রান্ত ঝামেলার সুরাহা করেননি। কেবল কেন আপনার হুকুম অমান্য করে প্রথম বার হাজির হননি সে কারনে স্বামী স্ত্রী দুজনকে যেভাবে আপনি মেরেছেন তার দুটো ছবি ই আমি দিলাম। এমন সব স্পর্শকাঁতর জায়গাতে আপনার নিপীড়নের চিহ্ন যা সামাজিক মাধ্যমে দিলে তোলপাড় হবে। চাইনা হোক। আপনি চাইলে দিব। স্বামীর অবস্থা ও গুরুতর। মহিলাকে বোরহানউদ্দিন হসপিটালে ট্রিটমেন্ট দেননি কর্তৃপক্ষ আপনার ভয়ে।
গৃহবধু সুফিয়া বিচার চাইতে গিয়ে ছিলেন বোরহানউদ্দিনের সুযোগ্য (?) ইউএনও সাহেবের কাছে। উনি উল্টো সুফিয়াকে আপনার হাতে তুলে দেয়ার বন্ধোবস্ত করেন। এমন প্রক্রিয়া চলাকালে সুফিয়া পালিয়ে ইউএনও অফিস ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। সুফিয়া গ্রাম্য নারী। সেতো জানেনা আপনি ইউপি চেয়ারম্যান হলেও যে পদ মর্যাদায় ইউএনওর উপরে। জানলে যেতেন না বোধ হয়।
কামরুল ভাই, এতো নির্মম নির্দয় পাষাণ হৃদয়ের মানুষ আপনি? আপনার চেহারায় তেমন কোন ছাঁপ নেই। তবে ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয় আপনাদের পূর্ব পুরুষ যারা মিয়া ভুঁইয়া চৌধুরী ছিলেন, ছিলেন জমিদার তারা নাকি নীল রক্ত বইতেন শরীরে। কষ্টের রঙ নাকি নীল হয়। আর সে কারনে তারা প্রজাদের উপরে এমন নিপীড়ন চালাতেন। আপনিও সেই চৌধুরী বংশের মানুষ। হতে পারে আমাদের মত কমদামী লাল রক্তের মানুষ আপনি না।
আপনি সাংবাদিকতা করেন কিনা আমি জানিনা। যেহেতু বোরহানউদ্দিন প্রেস ক্লাব এর সম্মানীত সভাপতি আপনি সেহেতু আপনি বিরাট এক মানবতাবাদী চেয়ারে আছেন। সেখানে থেকে আপনি কেমন করে….???
বিচারহীনতাই যেখানে আইন সেখানে তো বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদবেই। দুঃখ আর সমবেদনা জানাই নির্যাতীতা বোন সুফিয়া দম্পতিকে। এর বেশী কিছু করার তো নাই। এমন ঘটনা কেউ মিডিয়াতে তুলে ধরবে বোরহানউদ্দিনে অমন বুকের পাটা ওয়ালা সাংবাদিক কে? ঘুঁঘু চড়িয়ে দেবোনা ভিটে মাটিতে! যাহোক। ভাল থাকুন। সুখেন থাকুন। সবাই। আপনাকেসহ বোরহানউদ্দিন দৌলতখানের সর্বোস্তরের মানুষকে ঈদ উল আজহার অগ্রিম মোবারক। ভাল থেকো বোন সুফিয়া। পারলে ক্ষমা করে দিও।
-এফএইচ