শনিবার ● ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর
মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর
ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী ফাঁসিতে ঝুললেন। শনিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটে গাজীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। কাশিমপুর কারাগার-২এর সিনিয়র জেলসুপার প্রশান্ত কুমার বণিক পরিবর্তন ডটকমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামের প্রধান অর্থদাতা মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর করতে সরকারের নির্বাহী আদেশ শনিবার দুপুরের পর কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়।
এর আগে, মীর কাসেমের সঙ্গে শেষবার দেখা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষের ডাক পেয়ে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কাশিমপুরে পৌঁছান তার পরিবারের ৪৫ জন সদস্য। পরে ৩৮ জনের অনুমতি মেলে কাসেমের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে গত শুক্রবার জানিয়ে দেওয়ার পরই মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
গত ৩০ আগস্ট মীর কাসেমের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রিভিউ খারিজের এই রায়ের ফলে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রিভিউ খারিজের রায় দেন। আপিল বেঞ্চে থাকা অন্য চার বিচারপতি ছিলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সেই রায়ের বিরুদ্ধে মীর কাসেম আলী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন। ২০১৬ সালের ৮ মার্চ দেওয়া আপিলের রায়ে মীর কাসেম আলীকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল থাকে। এরপর ২০১৬ সালের ১৯ জুন আপিলে বহাল থাকা মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। মোট ৮৬ পৃষ্ঠার ওই রিভিউ আবেদনে ১৪টি যুক্তি তুলে ধরে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চান তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৭ সালে ইসলামী ছাত্র সংঘ নাম বদল করে ছাত্রশিবির নামে রাজনীতি শুরু করে। মীর কাসেম ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ওই সময় থেকে তিনি জামায়াতের রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে দলটির অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্ত করার জন্য উদ্যোগী হন। ১৯৮০ সালে তিনি রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামী নামের একটি বিদেশি বেসরকারি সংস্থার এদেশিয় পরিচালক হন। এ ছাড়া তিনি দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান, ইবনে সিনা ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য। ধীরে ধীরে তিনি জামায়াতের অর্থের অন্যতম যোগানদাতায় পরিণত হন।