চরফ্যাশনে পোস্টারিং করে হচ্ছে প্রাথমিক স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন

বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশনে জমে উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে। পৌর নির্বাচন, ইউপি নির্বাচনের মত এত বড় পরিশনে না হলেও কিছু কিছু বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসারে সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণী হতে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে নেই কোন পোস্টার, প্রচার প্রচারণা। তাই অনেকেই হয়ত খোঁজ রাখেননা এ নির্বাচনের। এর মধ্যে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ৩৭ নং আছলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন-২০১৬ উপলক্ষ্যে এক প্রার্থীর পোস্টার দেখে নজরে আসে এ প্রতিবেদকের। নির্বাচনে প্রার্থী তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মো. ইমতিয়াজ আহমেদ ইফাজ উট পাখি মার্কা প্রতিক নিয়ে পোস্টারিং করেছে। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে ইমতিয়াজ আহমেদ ইফাজ জানায়, সে এবছর দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার বাবার উৎসাহে সে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে। তার পিতা মো. দুলালের সাথে আলাপকালে তিনি ভোলার সংবাদ ডট কমকে বলেন, ছেলেকে নের্তৃত্ব দানে উৎসাহ দেয়ার জন্য তিনি ছেলেকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের জন্য আগ্রহী করেছেন। তিনি ছেলেকে পোস্টার বানিয়ে দিয়েছেন। তিনি ১৭৫ পিস পোস্টার ছাপিয়ে দিয়েছেন। তিনি আরো জানান, বর্তমান সরকার ছাত্র ছাত্রীদের নের্তৃত্ব দানে উৎসাহ দেয়ার জন্য তৃতীয় শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে কাউন্সিল নির্বাচন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাই তিনি তার ছেলেকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য আগ্রহী করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আবুল ফারাহ ভোলার সংবাদ ডট কমকেবলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয় স্টুডেন্টদের মেধা বিকাশ, তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা ছাত্র ছাত্রীদের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটিকে অবহিত করার জন্য তারা এ কাউন্সিল নির্বাচনের আয়োজন করেন। তিনি আরো বলেন, ২০১১ সাল থেকে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে প্রার্থী এবং প্রতীক সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, এ নির্বাচনে তৃতীয় শ্রেণী থেকে ৫ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাধ্যে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। এতে কোন প্রতীক নেই। কোন জামানত নেই। আর নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকেই নেয়া হয়। এবং শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সদস্যরা সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকেন। আগামী কাল ৪ মার্চ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ফলাফলে এগিয়ে থাকা প্রার্থীর মধ্যে ৫ জন প্রার্থীকে কাউন্সিল নির্বাচন করা হবে। এ কাউন্সিলের মেয়াদ হবে ১ বৎসর। এ বছর মোট ৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে। এর মধ্যে ছেলে প্রার্থী ৪ জন এবং মেয়ে প্রার্থী ৫ জন। এ বিদ্যালয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৬২ জন। এক প্রার্থী তার পক্ষে উট পাখি মার্কা প্রতীক নিয়ে পোস্টারিং করেছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো.আবুল ফারাহ বলেন, এ নির্বাচনে কোন প্রতীক বা পোস্টার নেই। ব্যালট পেপারে শুধু প্রার্থীর নাম থাকবে। কেউ যদি প্রতিক দিয়ে পোস্টারিং করে থাকে তা করা তাদের উচিৎ হয় নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবিএম খলিলুর রহমান বলেন, অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর জানুয়ারী মাসে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনে নির্বাচিত প্রার্থীরা স্টুডেন্টরা এক বছর মেয়াদী দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের কাজ হবে অনেকটা ক্লাস ক্যাপ্টেন এর মত। তাদের মেধা বিকাশ, নের্তৃত্ব প্রদান, শিক্ষককে শ্রেণী কক্ষে সহযোগীতা করা, সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরা। সকল বিদ্যালয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না, এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে সকল বিদ্যালয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।