

সোমবার ● ৪ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » জেলার খবর » তজুমদ্দিনে গ্রাহকদের অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে এনজিও নবলোক উধাও
তজুমদ্দিনে গ্রাহকদের অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে এনজিও নবলোক উধাও
রফিক সাদী: ভোলার তজুমদ্দিনে নবলোক নামের একটি এনজিও ঋণ দেয়ার প্রলোভনে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে উধাও হয়েছে। ৪ জুলাই (সোমবার) প্রায় অর্ধশত গ্রাহক ঋণের টাকা নিতে এসে অফিসে তালাবদ্ধ দেখেন। পরে গ্রাহকরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
সুত্রে জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলার গোডাউন রোডের শ্রমিক কালা চান দাসের বাসা ভাড়া নেয় নবলোক নামের একটি এনজিও । ২৮ জুন ওই বাসায় এনজিও-র নামে নেয়া ভাড়া নেয়া অফিস চালু করেন এক নারীসহ তিন ব্যক্তি। ঋণ বিতণের নির্ধারিত সময় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অর্ধ শতাধিক গ্রাহক এসে অফিস তালাবদ্ধ পায়। এসময় ক্ষুব্দ গ্রাহকরা হট্টগোল করতে চাইলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহায়তায় তারা থানায় অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিরা নবলোক নামের একটি এনজিওর পরিচয় দিয়ে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের পঞ্চায়েত কান্দি, বাদুরা, খাশের হাট, কালির বাজার, দেওয়ানপুর, চৌমুহনী, সোনাপুরের ইন্দ্রনারায়ন পুর, চাপড়ি, শম্ভুপুরের ভুবন ঠাকুর, গোলক পুর, শিবপুরসহ অন্তত ২৫ টি এলাকায় নারীদের নিয়ে সমবায় সমিতি গঠন করে। ঋণ প্রদানের ফাঁদে ফেলে এসব গ্রাহকদের কাছ ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হারে এককালীন সঞ্চয় গ্রহণ করে তারা ।
সোমবার কয়েকটি সমিতিকে ঋণ বিতরনের তারিখ ধার্য্য করে। ঋণের টাকা নিতে এসে দেখেন অফিস তালাবদ্ধ। প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা জানান, তারা ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ১০ শতাংশ সঞ্চয়ের নামে হাতিয়ে নেয় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।
বাসার সামনে সাঁটানো একটি সাইনবোর্ডে পিকেএসএফ’র অর্থায়নে পরিচালিত ঋণ কার্যক্রমের উল্লেখ রয়েছে। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির একটি সনদ নম্বরও দেয়া আছে। সদস্যদের দেয়া পাশ বইতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় লেখা রয়েছে খুলনা জেলা সদরের নিরালা রোড।
আড়ালিয়ার বাদুড়া গ্রামের ভুক্তভোগী মোঃ হান্নান জানান, আমাকে এক লক্ষ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলায় ১০ হাজার টাকা সঞ্চায় নেয়। আজ ঋনের টাকা নিতে এসে দেখি অফিস তালাবদ্ধ। আমাদের এলাকায় সমিতি গঠন করে আমার সাথে আরো প্রায় ২০-২৫ জনের কাছ থেকে এভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়।
বাড়ি মালীক কালা চাঁদ দাস জানান, এক সপ্তাহ আগে এনজিও- নবলোককে বাসা ভাড়া দেই। কিন্তু তাদের সাথে আগামী ৬ জুলাই এক বছরের অগ্রিম ভাড়া প্রদান সাপেক্ষে লিখিত চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কথা। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যার পর থেকেই তারা নিরুদ্দেশ। ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তজুমদ্দিন থানা অফিসার ইন-চার্জ এসএম জিয়াউল হক বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। প্রতারকদের বিষয়ে সঠিক তথ্য কেহ দিতে পারেনি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মরিময় বেগম বলেন, নবলোক নামে এনজিও র তজুমদ্দিনে কার্যক্রম সম্পর্কে জানানো হয়নি। এই এনজিওর কোন তথ্য জানা নেই। টাকা লেনদেন বিষয়ে এলাকার কোন জনপ্রতিনিধিও আমাদের অবহিত করেনি।
-এফএইচ