মঙ্গলবার ● ১৩ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » জাতীয় » ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়ায় ২২ দিন ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা
ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়ায় ২২ দিন ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার মেঘনার ইলিশা থেকে চর পেয়াল ও তেতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় আজ বুধবার (১৪ অক্টোবর) থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। একই সঙ্গে ইলিশ বিক্রি, বাজারজাত, পরিবহন ও সংরক্ষণেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। সরকারের এই নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে মাছ ধরার জাল, নৌকা, ট্রলারসহ সরঞ্জাম নদী থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন জেলেরা।
ভোলার সদরের ভোলার খাল এলাকার জেলে মো. ইব্রাহিম মিয়া বলেন, মাছ ধরার ওপর সরকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই আমরা জেলেরা নদী থেকে মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার, ইঞ্জিনসহ সকল সরঞ্জাম উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। নিষেধাজ্ঞার সময় আমরা নদীতেও যাব না, মাছও ধরবো না।
ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতলি এলাকার জেলে মো. খোকন ও মো. শরীফ মিয়া বলেন, সরকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, কিন্তু কিস্তি আদায় তো বন্ধ করেনি। এনজিও কর্মকর্তারা আমাদের বাড়ি গিয়ে কিস্তির টাকার জন্য চাপ দেবে। আমাদের তো এখন কোনো ইনকাম নেই। পরে আমরা বাধ্য হয়ে পালিয়ে মাছ ধরবো। তাই সরকারের কাছে দাবি জানাই- এই ২২ দিন কিস্তির টাকা আদায় বন্ধের ব্যবস্থা করা হোক।ভোলা সদরের রাজাপুর ইউনিয়নের জেলে মো. সামছুদ্দিন ও হাফেজ মিয়া বলেন, নদীর ওপর আমাদের জীবন-জীর্বিকা চলে। এই ২২ দিন নদীতে মাছ ধরতে পারবো না। এ সময় সরকার প্রতি বছর আমাদের জেলেদের জন্য চাল বরাদ্দ দেয়। এ বছর সেই চাল যদি ২-৩ দিনের মধ্যে আমরা পাই তাহলে নদীতে যাবো না। ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়তদার মো. নোয়াব আলী বলেন, আমরা মাছ ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের এক একটা আড়তে ৫-৬ জন করে কর্মচারী চাকরি করে। এই ২২ দিন মাছের ব্যবসা বন্ধ থাকায় আমরা কর্মচারীদের নিয়ে বিপাকে পড়ি। তাই সরকারের কাছে আমরা সহযোগিতার দাবি জানাই। ভোলা সদরের রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, রাজাপুর ইউনিয়নের বেশির ভাগ মানুষ জেলে। এ সময় ওই সব মানুষ অনেক কষ্টে দিন কাটায়। সরকার প্রতি বছর এ সময় যে চাল বরাদ্দ দেয় সেটা যদি এ বছর দ্রুত দেয় আমরা তাদের মাঝে দ্রুত বিতরণ করতে পারব। মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের অভিযান শতভাগ সফল হবে। তিনি সরকারে কাছে দ্রুত চাল বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান। ভোলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ মধ্য রাত থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ভোলায় নদীতে মাছ শিকার, বিক্রি, বাজার জাত, পরিবহন ও সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। জেলেরা যাতে দ্রুত চাল পায় সে লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিওর কিস্তি আদায় এ সময় বন্ধ রাখার জন্য আমরা তাদের চিঠি দিব।
জানা গেছে, ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ জেলে রয়েছে। আর সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার ২৬০ জন। এ বছর সরকারি চাল পাবেন এক লাখ ২০ হাজার জেলে।
এফএইচ