শিরোনাম:
●   উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় ●   ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ●   ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ●   চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস ●   ডয়েসে ভ্যালী ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনিস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদকদের কর্মশালা সম্পন্ন ●   ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ●   ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ●   ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ●   ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ●   আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী
ভোলা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভোলার সংবাদ
শুক্রবার ● ৩ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » বোরহানউদ্দিনে জসিম হায়দার পরিবারের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খোলে না কেউ!
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » বোরহানউদ্দিনে জসিম হায়দার পরিবারের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খোলে না কেউ!
৮৯৮ বার পঠিত
শুক্রবার ● ৩ এপ্রিল ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বোরহানউদ্দিনে জসিম হায়দার পরিবারের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খোলে না কেউ!

---

বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার বোরহান উদ্দিনে সাংবাদিক সাগর চৌধুরীকে মারধরকারী আদনান রহমান নাবিল হায়দারের পরিবার উপজেলায় দোর্দণ্ড প্রভাবশালী। প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে বড় মানিকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হিসেবে শাসন ক্ষমতা তার দাদা ও পরে বাবার নিয়ন্ত্রণে। বাবা জসিম উদ্দিন হায়দার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। দুই চাচাও ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বশীল। পরিবারের সবাই প্রভাবশালী হওয়ায় কোনও অনিয়ম হলেও এলাকার কেউ সাধারণত তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পান না। এ কারণেই  সাংবাদিক সাগর চৌধুরী তার বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ আনায় অসীম ক্ষমতার প্রভাবে তাকে তুলে এনে মারধরের ঘটনা ঘটায় নাবিল। এমনকি এ ঘটনার পরও প্রভাবশালী পরিবারটির বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস করেনি কেউ।

বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সরেজমিন বোরহান উদ্দিন সদর ও বড় মানিকা ইউপি ঘুরে দেখা গেছে, এলাকাটি যেন চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোক দ্বারা বেষ্টিত। স্থানীয় সবাই চেয়ারম্যান পরিবারকে এতটাই ভয় পায় ও সমীহ করে যে তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস হয়নি কারও। তবে এত কিছুর মধ্যেও কয়েক জন জেলে নিচু স্বরে তাদের জন্য বরাদ্দের চেয়ে কম চাল পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, জসিম উদ্দিন হায়দারের বাবা মরহুম বশির আহমেদ ছিলেন বড় মানিকা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান,পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি। বশির হায়দারের তিন ছেলের মধ্যে জসিম উদ্দিন বড়। মেজ ছেলে একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহির উদ্দিন বাবর এবং ছোট ছেলে রাসেল মিয়া বোরহানউদ্দিন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বড় মানিকা ইউনিয়নে গিয়ে অনেকের সঙ্গে হায়দার পরিবার নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু চেয়ারম্যান সম্পর্কে কেউ মুখ খলতে রাজি হননি।

রানীগঞ্জ বাজারে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের পুরনো একতলা ভবন। এখানেই সরকারি সাহায্যের চাল রাখা হয়।এখান থেকেই চাল বিতরণ করা হয়। এখান থেকে ওই রাতে চাল সরানো হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীদের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এসময় তাদের মুখমণ্ডলে ভয় ও অস্বস্তি দেখা দেয়। সবাই প্রসঙ্গ পাল্টাতে ‘আমি জানি না’, ‘আমি দেখি নাই’ বলে দ্রুত সরে যান।

তাদের কথা শুনে বোঝা যায় প্রভাবশালী চেয়ারম্যান পরিবারের বিরুদ্ধে দূরে থাক তাদের বিষয়েই সাংবাদিকের সামনে কথা বলতে রাজি নন কেউ। তবে এরই মধ্যে স্থানীয় মাদ্রাসার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, ‘জসিম চেয়ারম্যান এর বাবা বশির আহমেদ অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি ৩৮ বছর চেয়ারম্যানগিরি করেছেন। বর্তমান চেয়ারম্যানও আগে ভাল ছিলেন, এখন কেমন জানি হয়ে গেছেন। তিনি বলেন,সাগর সাংবাদিকরেও চিনি। হেও ভালোমানুষ। কী জানি একটা ঘাপলা হইছে,হেইল্লইগ্গা চেয়ারম্যানের পোলায় হেরে মারছে হুনছি। এইডা ঠিক হয় নাই।’

ওই মাদ্রাসা শিক্ষক যখন তার প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিলেন তখন ঐ পুরাতন ইউপি ভবনের সামনের বাড়ির এক বৃদ্ধ তাকে (মাদ্রাসা শিক্ষককে) ধমক দেন। সঙ্গে সঙ্গে আর কথা না বলে সেখান থেকে চলে যান ওই মাদ্রাসা শিক্ষক।

পরে ইউনিয়নের কেরামতগঞ্জ বাজারে কথা হয় এক কলেজ ছাত্রের সঙ্গে।এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তার মন্তব্য,‘চেয়ারম্যানগো অনেক ক্ষমতা। এক ভাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি,আরেক ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান,আরেক ভাই আওয়ামী লীগের নেতা। সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি তোফায়েল আহমেদ সাহেবও তাদেরকে খুব ভালো জানেন। তাগো সামনে কারও কোনও কথা বলার ক্ষমতা নাই। তবে তারা তিন ভাই-ই ভালো মানুষ। পোলাডা (নাবিল) ঢাকায় থাইক্কা মস্তান অইছে। সাংবাদিক মাইরা জেলে গেছে। এইবার এ ঘটনায় চাপে থাকবো।’

ইউনিয়নের পাটোয়ারী বাজারের এক মুদি দোকানদার জানান, ‘চেয়ারম্যান সপ্তাহে তিন দিন পরিষদে আসেন। রিলিফের চাউল দেয়নের সময় কার্ডের মানুষের কিছু কম দিয়া হের দলীয় ও খাতিরের মাইনসেরে ওই চাউল দেন।’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত সোমবার (৩০ মার্চ) চাল কম দেওয়ার অভিযোগ এনে দুজন জেলে সাংবাদিক সাগর চৌধুরীর ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে ওই দুই জেলেকে চেয়ারম্যান নিজে ধরে এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সামনে বক্তব্য দিতে বলেন। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ইউএনওর কাছে উল্টো কথা বলেন ওই দুই জেলে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির গাজী বলেন,‘চেয়ারম্যান জসিম হায়দার দুই জেলেকে আমার সামনে আনেন। জেলেরা আমাকে বলেছেন,সাগর চৌধুরী তাদের ভুল বুঝিয়ে বক্তব্য রেকর্ড করেছেন।’

ইউনিয়নের আলিমুদ্দিন বাংলাবাজারে নাম প্রকাশ না কারার শর্তে বিএনপির স্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘এখানে আওয়ামী লীগের লোকজনেরও চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বাইরে কথা বলার সাহস নেই। সাধারণ লোকের তো কিছু বলার প্রশ্নই আসে না।’

 উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও বড় মানিকা ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার মিজানুর রহমান জানান, এই ইউনিয়নে জেলের সংখ্যা দুই হাজার ৯১৪ জন। এদের মধ্যে খাদ্য সহায়তার জন্য তালিকাভুক্ত এক হাজার ৫০০ জন। জাটকা রক্ষায় তালিকাভুক্ত প্রতিটি জেলে পরিবারকে ফেব্রুয়ারি থেকে মে—এই চার মাসের প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে দেওয়া হয়। সেই হিসাবে এই জেলেদের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ—এই দুই মাসে ৮০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। চেয়ারম্যান বলছেন, তিনি ৩৮ কেজি ৫০০ গ্রাম করে দিয়েছেন। এটা অনিয়ম কিনা জানতে চাইলে ট্যাগ অফিসার বলেন, ‘ভাই সবই বোঝেন, আমাদের কিছু করার নেই।’

যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে দাবি করেছেন, তারা ৩৮ কেজিরও কম চাল পেয়েছেন।

এদিকে, চাল কম দেওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) ভোলা জেলা কালেক্টরেটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. দিদারুল আলম ওই ইউনয়ন পরিষদে গেছেন। সেখানে দেখা গেছে, চেয়ারম্যান সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ইউপি মেম্বারসহ তার নিজস্ব কিছু লোক এনে রেখেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের কম্পাউন্ডে ইউপি মেম্বার নওশাদ পাটোয়ারি ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে চাইলেও চেয়ারম্যান নিষেধ করায় তিনি কিছু বলেননি।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. দিদারুল আলম বলেন,‘এখানে আমার কিছু বলা নিষেধ আছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দেবো।’

চেয়ারম্যান জসিম হায়দার বলেন, ‘চাল কম পাওয়ার ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। সাংবাদিক সাগর চৌধুরীকে আমার ছেলে মারধর করছে—বিষয়টি ঠিক নয়। তবে এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এখন সবকিছু আদালতে গিয়ে দেখতে হবে।’

এসিটি/এফএইচ





আইন ও অপরাধ এর আরও খবর

ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী
ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় আদালত প্রাঙ্গণে বিচার প্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায় কুঞ্জ’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ভোলায় আদালত প্রাঙ্গণে বিচার প্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায় কুঞ্জ’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
ভোলায় নানা আয়োজনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত ভোলায় নানা আয়োজনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত
বোরহানউদ্দিনে সাবেক ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ বোরহানউদ্দিনে সাবেক ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
ভোলা জেলা ও দায়রা জজ মহসিনুল হক এর বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত ভোলা জেলা ও দায়রা জজ মহসিনুল হক এর বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
লালমোহনের রমাগঞ্জে জেলেদের চাল বিতরণে ব্যাপক নয় ছয়ের অভিযোগ লালমোহনের রমাগঞ্জে জেলেদের চাল বিতরণে ব্যাপক নয় ছয়ের অভিযোগ
দক্ষিণ আইচার চর নিজামে জবাই করা হরিণ উদ্ধার দক্ষিণ আইচার চর নিজামে জবাই করা হরিণ উদ্ধার
লালমোহনে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, তোলপাড় লালমোহনে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, তোলপাড়
লালমোহনে বিএনপির নেতা কর্মীদের বাড়িতে গণহারে পুলিশের অভিযান, গ্রেপ্তার-৭ লালমোহনে বিএনপির নেতা কর্মীদের বাড়িতে গণহারে পুলিশের অভিযান, গ্রেপ্তার-৭

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

© 2024 দ্বীপের সাথে ২৪ ঘণ্টা Bholar Sangbad, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।