বৃহস্পতিবার ● ১০ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » জেলার খবর » বোরহানউদ্দিনে এক স্কুলের শিক্ষক ৮ মাসে ৩২ দিন ছুটি, স্বাক্ষর দিয়ে স্কুল ত্যাগের অভিযোগ
বোরহানউদ্দিনে এক স্কুলের শিক্ষক ৮ মাসে ৩২ দিন ছুটি, স্বাক্ষর দিয়ে স্কুল ত্যাগের অভিযোগ
বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি: ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৪৭ নং উত্তর পূর্ব পক্ষিয়া সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিজাম উদ্দিন ৮ মাসে নানা অজুহাতে ৩২ দিন ছুটি নিয়েছে। এছাড়াও স্কুলে এসে স্বাক্ষর দিয়ে বাড়ীতে চলে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুধু এরকম চিত্র এ বিদ্যালয়ের নয় অনেক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শিক্ষকগণ স্কুল ফাঁকি দিয়ে নিজের কাজ ও ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের মাঝে। বর্তমান সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে একজোটে সরকারি করে শিক্ষকদের উন্নতি করলেও শিক্ষকদের গাফিলতির কারনে শিক্ষার মান উন্নয়ন হচ্ছে না। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আরোও মনিটরিং বাড়ানোর দাবী করছেন শিক্ষার্থীর অভিভাবকগন।
সূত্র মতে জানা গেছে, ৪৭ নং উত্তর পূর্ব পক্ষিয়া সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিজামউদ্দিন ২০১৯ সালের ১৯-২০ মার্চ, ২৭ এপ্রিল, ২ মে, ১৮ জুন, ৬,১১ জুলাই, ১৯ আগস্ট, ২১ আগস্ট হইতে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০ দিন, ২১,২২ সেপ্টেম্বর ও ১-২ অক্টোবর সহ মোট ৮ মাসে নানা অজুহাতে ৩২ দিন ছুটি কাটিয়েছে। তার বাড়ীর দরজায় স্কুল হওয়ায় তিনি স্কুলে আসলেও প্রায়ই স্বাক্ষর দিয়ে নিজের কাজে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠে। এদিকে অভিযোগ রয়েছে একটানা ২০ দিন অসুস্থ্য জনিত ছুটি নিয়ে নিজের পারিবারিক কাজ করেন। ডাক্তারি সার্টিফিকেট দিয়ে ছুটি কাটানো কাগজেও ভুল রয়েছে। ডাক্তার অসুস্থ্য দেখিয়েছে ২০১৮ সালে আর শিক্ষা অফিস তার ছুটি দিয়েছে ২০১৯ সালে। শিক্ষকরা বলেন, তার মানসিক সমস্যা ছিল আর ডাক্তার লিখেছেন জন্ডিসের সমস্যা। কাগজে কথায় কোন মিল নেই। তবু শিক্ষা অফিস কিভাবে তাকে একটানা ২০ দিন ছুটি দিলোও তারও উত্তর মিলছে না। তবে শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করেই সে এ ছুটি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষা অফিস বলছে ডাক্তারি সার্টিফিকেট দেখে ছুটি দিয়েছে তাকে।
শুধু সেই এরকম করে না অনেকই এরকম স্কুল ফাঁকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের টাকার জন্য বড় নামি দামি প্রতিষ্ঠানে পড়াতে পারি না। বাড়ীর পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেই কিন্তু কিছু শিক্ষক স্কুলে আসে আর যায়। এজন্য প্রাথমিক স্কুলে ভালোভাবে পড়াশুনা হয় না। বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করে সকল রকম সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু ফাঁকিবাজ শিক্ষকের কারনে সরকারের উদ্যোগ গুলো সফল হচ্ছে না। তাই তারা প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নের জন্য আরোও কঠোর নজরধারী কামনা করছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে।
এব্যাপারে উত্তার পূর্ব পক্ষিয়া সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিজামউদ্দিন বলেন, শুধু আমি না অন্য শিক্ষকরাও স্কুল ফাঁকি দেয়। আমি ২০ দিন ছুটি চাইলে কর্তৃপক্ষ আমাকে বলেছে ডাক্তারি সার্টিফিকেট দিয়ে আবেদন করতে। তাই ডাক্তার শাহিনকে অসুস্থ্যতার কথা বলে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ আমার ২০ দিনের ছুটি মঞ্জুর করে।
এব্যাপারে বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবো যদি তার অনিয়ম পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবো । তিনি আরোও বলেন. আমরা স্কুল মনিটরিং করে যাচ্ছি যদি কেউ ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
-এএম/এফএইচ