সোমবার ● ৪ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » জেলার খবর » তিনি চাকরি করেন লালমোহনে, মাসকে মাস ছুটি কাটান ভারতে
তিনি চাকরি করেন লালমোহনে, মাসকে মাস ছুটি কাটান ভারতে
মিজানুর রহমান, লালমোহন: লালমোহনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক ছুটি না নিয়ে বছরে ৩ থেকে ৪ বার ভারত গিয়ে মাসকে মাস অবস্থান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার চরভূতার মুগোড়িয়া বাজারের দঃ চর মিয়াজী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঙ্কর মজুমদার স্ব-পরিবারে পাশ্বর্তী দেশ ভারতে ১ ছেলে ১ মেয়ে ও স্ত্রী ২০১৩ সাল থেকে ভরতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কুকশিমলা গ্রামে বসবাস করে। প্রধান শিক্ষক সঙ্কর মজুমদার প্রতিবছর ৩ থেকে ৪ বার ভারতে গিয়ে মাসকে মাস সেখানে পরিবারের সাথে অবস্থান করে। ছুটি বর্হিভূত ও অন্য একজন সহকারী শিক্ষক দিয়ে প্রধান শিক্ষকের নামে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেওয়া ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দেশ ত্যাগ মর্মে বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর প্রধান শিক্ষকের নামে অভিযোগ পত্র দায়ের করেন।
এছাড়াও প্রধান শিক্ষক তার ছেলে ও মেয়ে বিদেশে অবস্থান করলেও তার বিল বেতেনের সাথে ছেলে মেয়ের শিক্ষা ভাতার নামে মাসিক ১ হাজার টাকা করে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা অবৈধ ভাবে ভোগ করেছে। এই প্রধান শিক্ষক তার স্থাবর অস্থারব সকল সম্পত্তি বিক্রি করে মুগড়িয়া বাজারের পাশ্বর্তী একটি কাচারীতে নিজে রান্নবান্না করে জীবন যাপন করেন। ধারণা করা হয় তার ছেলে মেয়ে সহ পরিবারের সকলে ভারতের নাগরিত্ব নিয়ে সেখানে বসবাস করছে। দুই দেশে পা রাখা এই শিক্ষক সরকারী চাকরীর সুবিধার্থে বাংলাদেশে অবস্থান করলেও তার মন পড়ে রয়েছে ভারতের বর্ধমানে।
এব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হক জানান, প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন ছোট খাট ছুটি আসলেই ছুটির আগে পিছে অনেক দিন অন্য একজন সহকারী শিক্ষক দিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে ভারতে অবস্থান করেন। তাছাড়াও তার ছেলে মেয়ে প্রায় ৬/৭ বছর ভারতে অবস্থান করলেও ছেলে মেয়েদের শিক্ষাভাতার নামে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত বেতন উত্তোলন করে যা সম্পুর্ণ অবৈধ। আমি বার বার তাকে এসকল বন্ধ করতে বললেও সে আমাকে অগ্রাহ্য করে এসকল অবৈধ কাজ করায় আমি প্রায় ১৫ দিন পূর্বে তার বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা অফিসারে বরাবর অভিযোগ পত্র দায়ের করি।
ভারতে থাকার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সঙ্কর মজুমদার বলেন, আমার ছেলে মেয়ে ২০১৩ সাল থেকে ভারতে পড়াশুনা করে এবং আমার স্ত্রীও সেখানে থাকে বিধায় আমাকে ছুটি পেলে ভারতে যেতে হয়, ভারতে যেতে কারো অনুমতি নেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, শিক্ষাভাতা পেতে ২০১৩ সালের পর আমি কোন প্রত্যয়ন পত্র জমা দেইনি।
প্রত্যয়ন পত্র ছাড়া একজন শিক্ষক কিভাবে শিক্ষা ভাতা ভোগ করে এমন প্রশ্ন করলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমেরিকা থেকে পড়াশুনা করলেও সে শিক্ষাভাতা পাবে এবং সে ভারতে যাওয়ার ব্যাপারে কোন কিছু জানেন না।
অন্যদিকে ভোলা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র হালদার বলেন, দেশত্যাগ করতে হলে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। এছাড়াও তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন পত্র ছাড়া শিক্ষাভাতা পেতে পারেন না। বিদ্যালয়ের সভাপতি এসকল বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে থাকলে সে ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
-এফএইচ