মঙ্গলবার ● ৩ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর » চরাঞ্চলের জীবন
চরাঞ্চলের জীবন
নুরেআলম জিকু: বাংলাদেশের মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন জেলা ভোলা। এই জেলা চারদিকে নদী বেষ্টিত। আনুমানিক ১২৩৫ সালের দিকে মেঘনা নদীর বুক ও বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে জেগে ওঠা সু-বিশাল এই দ্বীপ। এটা বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপ। ভোলায় প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় বিছিন্ন দ্বীপ রয়েছে। এসব দ্বীপের মধ্যে মনপুরা উল্লেখ্যযোগ্য।
জেলা সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় যার অবস্থান। এর চারদিকে সাগরের অথৈ জলরাশি। প্রমত্তা মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ের তালে সিক্ত এখানকার পলিমাটি। সবুজ শ্যামল ঘেরা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলা ভূমি রূপালী দ্বীপ মনপুরা। ১৩০০ শতাব্দীতে মনপুরা দ্বীপের উৎপত্তি। তবে বসবাস শুরু হয় ষোড়শ শতাব্দী থেকে। তখন থেকে দ্বীপটি বাকলা চন্দ্রদ্বীপের জমিদারির অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে ইংরেজ শাসনামলে পর্তুগিজরা মনপুরায় আস্তানা গাড়েন। এখান থেকেই তারা সমগ্র বাংলায় ব্যবসা পরিচালনা করতেন। এই দ্বীপের প্রধান আকর্ষণ হাজার হাজার একর জমিতে ম্যানগ্রোভ বনায়ন ও পর্তুগিজদের নিয়ে আসা কেশওয়ালা লোমশ কুকুর। তবে কালক্রমে হারিয়ে গেছে কেশওয়ালা লোমশ কুকুর। এখন দু’চার গ্রাম ঘুরেও কেশওয়ালা লোমশ কুকুর দেখা মেলে না। মাইলের পর মাইল বৃক্ষরাজির বিশাল ক্যানভাস মনপুরাকে সাজিয়েছে সবুজের সমারোহে। এই বিশাল বৃক্ষরাজির মধ্যে আছে হরিণের অভয়াশ্রম।
শীত মৌসুমে এখানকার চিত্র ভিন্ন ধরনের। অতিথি পাখিদের আগমনে চরাঞ্চলগুলো যেন নতুন রূপ ধারণ করে। অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। এখানে পাখির উড়ে বেড়ানো, সুবিশাল নদীর বুক চিরে ছুটে চলা জেলে নৌকা, হরিণের পালের ছোটাছুটি, ঘুরে বেড়ানো গরু, মহিষ, ছাগল-ভেড়ার পাল আর কেওড়া গাছের বাগান যে কারো কঠিন হৃদয়ের মনও ছুঁয়ে নেয়। তবে দেশের অন্য সব পর্যটন কেন্দ্রের তুলনায় মনপুরার চিত্র কিছুটা ভিন্ন। মাইলের পর মাইল বৃক্ষের সবুজের সমাহার যেন ক্যানভাসে আঁকা শিল্পীর নিপুণ হাতে ছোঁয়া। যেখান থেকে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের দৃশ্য উপভোগ করাসহ সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে পর্যটকেরা ভিড় জমায়।
মনপুরা উপজেলার চারপাশে রয়েছে বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন কয়েকটি চর। চরগুলো কিশোরীর গলার মুক্তোর মালার মতো মনপুরার সৌন্দর্য্য ফুটিয়ে তুলছে। এর মধ্যে চর কলাতলী, চর জহিরউদ্দিন (মাঝের চর), চর তাজাম্মুল, চরজামশেদ, চরপাতিলা, চর পিয়াল, চরনিজাম, লালচর, বালুয়ারচর, চর গোয়ালিয়া, সাকুচিয়া রয়েছে। এছাড়াও মেঘনা নদীর বুকে আরো নতুন কয়েকটি জেগে উঠছে। চোখ ধাঁধানো রূপ নিয়েই এসব চরের জন্ম। এই ছোট-বড় ১০/১২টি চরে বন বিভাগের প্রচেষ্টায় ঘটেছে সবুজ বিপ্লব।
তবে এসব চরাঞ্চলের মানুষের জীবন বৈচিত্র্য কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। সুখ সঙ্গে দুঃখ নিয়েই তাদের জীবন। কখনো কখনো সুখ গুলো বিষাদ হয়ে ধরা দেয়। এসব চরাঞ্চলে প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছে। নদী ভাঙন, বন্যা, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টি, আশ্বিন-কার্তিক মাসের ‘মঙ্গা’ আর পৌষ-মাঘের কনকনে শীতের কষ্টকে সঙ্গী করে জীবন কাটাতে হয় এখানকার বাসিন্দাদের। নেই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা স্বাস্থ্যসেবা। মাইলের পর মাইল অতিক্রম করেলে দেখা মিলে দু’একটি আশ্রয়কেন্দ্র। এখন তিন বেলা পেটপুরে খেতে পারে এমন পরিবারের সংখ্যা খুবই কম। কেউ হয়তো একবেলা খায়, কেউ দুইবেলা। সব মিলিয়ে চরবাসীর দুঃখ-কষ্ট যেন নিত্যসঙ্গী।
মনপুরা শহর কেন্দ্রিক কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও বঞ্চিত আশেপাশের চরগুলোর মানুষ। শিক্ষার অব্যবস্থা এ চরাঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে জীবন ধারণের সার্বিক অগ্রগতি থেকে অনেক পিছিয়ে রেখেছে। নিরক্ষরতার কারণে কুসংস্কার, অসচেতনতা চরাঞ্চলের মানুষদের আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট, আশ্রয়কেন্দ্রের অভাবসহ নানা সমস্যার শেষ নেই। যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহালদশা। বর্ষার মৌসুমে এক বাসা থেকে অন্য বাসায় ছোট ছোট নৌকা কিংবা কলা গাছের ভেলাই যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। ইউনিয়ন পরিষদ, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, থানা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সময় ভিত্তিক ছোট ছোট নৌকার উপর ভরসা রাখতে হয়। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ার আসলে জনজীবন থমকে দাঁড়ায়। উপজেলা শহর ছাড়া নেই কোনো ডাক্তার। কখনো কখনো কবিরাজি ও ঝাড়ফুঁকে নির্ভরতায় জীবন কাটায়। বিচ্ছিন্ন এই চরাঞ্চলে সন্ধ্যা নামতেই রাত গভীর হয়। বিদ্যুৎ আবার কি সেটাও জানে না তারা। কুপির আলোতে রাতের রান্না কিংবা খাওয়া দাওয়া কাজ শেষ করতে হয়। থানা শহরের বিকেল ৫টায় বিদ্যুৎ এলেও রাত ১১টায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পুরো মনপুরা রাত ১১টায় থমকে দাঁড়ায় ঘোর অন্ধকারে। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কিছু পরিবার সৌর বিদ্যুৎ (সোলার) ব্যবহার করলেও ৯০ ভাগ মানুষ ঘুমিয়ে পড়েন সন্ধ্যার সঙ্গে-সঙ্গে। নীরব হয়ে যায় মনপুরা।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দিনে-দিনে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি চরাঞ্চলের জেলে পল্লীগুলোতে। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের ভাঙাচোরা চালা বেয়ে অঝোরে পড়ে বৃষ্টির পানি। এই জেলেদের আহরণ করা মাছ বিদেশে রপ্তানি করে কোটিপতি হয়েছেন অসংখ্য ব্যবসায়ী। অথচ জেলে পল্লীগুলো রয়ে গেছে আগের মতোই। পর্যাপ্ত স্কুল না থাকায় গ্রামের ছোট ছোট কোমলমতি ছেলে মেয়েরা পায় না শিক্ষার ছোঁয়া। এর ফলে প্রাথমিকের গণ্ডি শেষ না হতেই কন্যা শিশুদের বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়। আর ছেলেরা যে বয়সের স্কুলে থাকার কথা, তারা সেই সময় কাটায় জমিতে লাঙ্গল, জাল বুনা আর ছোট ছোট নৌকায় নিয়ে মাছ শিকার করে। আয় রোজগার শিখে গেলেই অল্প বয়সে বিয়ে করে সংসার শুরু করে। চরাঞ্চলগুলোতে বাল্যবিয়ে ও বহু বিয়ের প্রবণতা অনেক বেশি। এখানে ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। তারা মনে করে অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠানোই উত্তম। ফলে অসচেতনতার কারণে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার প্রবণতা একেবারেই না থাকায় গ্রামগুলোতে শিশু জন্মের হার ক্রমেই বাড়ছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ কি তাদের জানা নেই। ফলে অল্প বয়সেই রোগাক্রান্ত হয়ে অনেকই ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছেন। অন্যদিকে অপুষ্টি, শিশু ও গর্ভবতী মৃত্যুর হার ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
নদীবেষ্টিত এই চরাঞ্চলের মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। নেই স্যানিটেশন ব্যবস্থা। বাড়তি পাওনা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো রয়েছেই। অনেক সময় ঘূর্ণিঝড় যেতে না যেতেই আসে জলোচ্ছ্বাস। টানা জলোচ্ছ্বাস কমতে না কমতেই ছড়ায় ডায়রিয়া, কলেরার মতো বিভিন্ন রোগ-বালাই। এসব দুর্গম এলাকায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের দোকান না থাকায় দুরারোগ্য নানা ব্যাধিতে হঠাৎ করে আক্রান্ত রোগিরা যোগাযোগ সমস্যার কারণে শহর কেন্দ্রিক হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মারাত্মক জটিলতায় পড়েছে।
প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন এখানকার মানুষ। আকাশে মেঘ দেখলেই ভয়ে তাদের বুক কাঁপে। কখনো খরা, কখনো বন্যা। আর বন্যা শেষ হতে না হতেই নদীভাঙন। এই তিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা নিত্য দিনের কাজ। এসবের যেকোন একটি দুর্যোগ এলেই এলোমেলো করে দেয় তাদের জনজীবন। প্রতিবারই এলাকার মানুষ বন্যা, খরা আর ভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। নদী ভাঙনে জীবনযাত্রা পাল্টে দেয় নদীপাড়ের এসব মানুষকে। কখনো দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে তাদের ভাগ্যে জোটে কিছু সরকারি ত্রাণ। তবে যারা ত্রাণ পাওয়া উপযোগী তাদের কারো ভাগ্যে ত্রাণ জোটেনি। সরকারি এসব ত্রাণ যায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের ভাণ্ডারে।
দিন যতই যাচ্ছে ততই বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকেই বসতি গড়ে তুলেছেন এই দ্বীপগুলোতে। একই তালে বাড়ছে এসব এলাকার জনবসতি। কিন্তু এসব মানুষের নিরাপত্তার জন্য নেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। উপকূল দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রতিটি ঝড়ই যেন একেকটি মৃত্যু বার্তা। প্রতিবছরই বন্যায় বাড়িঘর ডুবে যায়। পানিতে ভেসে যায় গরু ছাগল মহিষ। কখনো কখনো বাদ যায় না কোলের শিশুও বয়স্করা। এসব চরাঞ্চলে নেই কোনো কিল্লা (মাটির স্তূপ) কিংবা আশ্রয়স্থল। বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন দু একটি সাইক্লোন সেল্টার থাকলেও সেখানে স্থান সংকুলান নয়। রয়েছে সচেতনতার অভাব। যার ফলে বন্যা কিংবা ঘূর্ণিঝড় হলেও কুঁড়েঘর ছেড়ে কেউ আশ্রয় কেন্দ্র যেতে চাচ্ছে না।
মেঘনা নদীর উত্তাল ঢেউ আর প্রকৃতির সঙ্গে নিত্য লড়াই করে বেঁচে থাকা উপকূলের জেলেদের ভাগ্যে দুর্দশা কখনই পিছু ছাড়ে না। যখন মেঘনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। তখন ঘরে বসে অলস সময় পার করার সময় নেই জেলেদের। নৌকা, বৈঠা ও জালও প্রস্তুত পরিবারের সবাইকে নিয়ে জেতে হবে নদীতে ইলিশ শিকারে। গ্রামে সবাই বেজায় খুশি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বেচাকেনারও ধুম ওঠে। এই মৌসুমের আয় দিয়েই সারা বছর চলতে হয় তাদের। আবার যখন নদীতে মাছ থাকে না তখন জেলে পল্লীতে ইলিশের জাল বুনে দিনকাটায়। সমুদ্রের সঙ্গে, প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করা সাহসী জীবন যোদ্ধার কাছে এখানকার একটি বড় আতঙ্কের নাম জলদস্যু। বর্ষা এলেই নামে বেনামে জলদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। প্রতিনিয়তই জেলেদের আয়ের একমাত্র অবলম্বন নৌকা, জাল ও মাছ ডাকাতি করে নিয়ে যায় জলদস্যু বাহিনী। জেলেদের তুলে নিয়েও মুক্তিপণ আদায় করা হয়। কখনো কখনো জেলেদের জীবনও দিতে হয় তাদের হাতে। অন্যদিকে মহাজনের দাদন, দমন-পীড়ন, দারিদ্র্য, নানামুখী সংকটে সারা বছরই দিশাহারা হয়ে থাকেন চরাঞ্চলের জেলেরা। ইলিশ মৌসুমে জালের ফাঁকে ইলিশ আটকালেও ইলিশ নিয়ে জেলে নৌকা ঘাটে ভেড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ইলিশ চলে যায় মহাজনের গদি ঘরে। নদীতে ইলিশ না মিললে মহাজনের টাকা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন এনজিও ঋণ দিয়ে থাকে। এতে তাদের কারো কারো জীবনে নেমে আসে অভিশাপ। তখন দরিদ্র থেকে আরো দরিদ্রতর হচ্ছে জেলেদের জীবন। অনেক জেলে মহাজনের দাদনের টাকা ও এনজিওদের চড়া সুদের ঋণ শোধ করতে না পেরে হচ্ছেন এলাকা ছাড়া। কেউবা টানছে জেলের ঘানি।
এখানকার মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস কৃষি কাজ ও নদীতে মাছ ধরা। নদীতে সব সময় মাছ ধরা ও কৃষি কাজ না থাকায় এখানকার ৮০ ভাগ শ্রমজীবী মানুষ বিপাকে পড়ে। অভাবের তাড়নায় বউ-ছেলে মেয়ে ফেলে রেখে তখন তারা কাজের সন্ধানে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশে বিভিন্ন জেলায় কাজ করতে যেতে হয়। অনেকেই কাজে গিয়ে আর ঘরে ফেরে না। সেখানেই বিয়ে করে আবারো নতুন করে সংসার গড়ে তোলেন। ফলে স্থানীয় গৃহবধূ ছেলেমেয়ে নিয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটায়। এসব চরে পুলিশ ফাঁড়ি না থাকায় সেখানে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে থাকে স্থানীয় প্রভাবশালী সন্ত্রাসী কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কাছে। চরের মানুষ এই প্রভাবশালীদের খপ্পরে পড়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটায়। কখনো গোয়াল ঘর থেকে গরু-ছাগল এমনকি ঘরের চালের টিন পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায় তারা।
নানা সংকট থাকা সত্ত্বেও চরাঞ্চলের মাটি এখানকার মানুষের অতি আপন। নদী যেন মোহবিষ্ট করে আঁকড়ে ধরেছে এখানকার পরিশ্রমী মানুষজনকে। নদী ভাঙনে আজ অনেকই নিঃস্ব হয়ে গেছে। তবুও একান্নবর্তী পরিবারের সবাই এক সঙ্গে থেকে এখন কষ্ট আর অশান্তি অস্থি-মজ্জায় মিশে গেছে। এতেও যেন সুখ তাদের।
সাংবাদিক, মানবজমিন