শনিবার ● ২৭ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » জাতীয় » মনপুরায় নৌ-এ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন
মনপুরায় নৌ-এ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন
মনপুরা প্রতিনিধি: মনপুরা লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ মানুষের দৌড় গোড়ায় পৌছানোর জন্য চিকিৎসা সেবা আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে শনিবার রামনেওয়াজ লঞ্চঘাটে বেলা ১টায় উপকুলীয় অঞ্চলে এই সর্বপ্রথম নৌ অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করলেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি। নৌ অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন পূর্বে নদী ভাঙন রোধ প্রকল্পের ১৯২ কোটি টাকার চলমান কাজ পরিদর্শন এবং শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন।
নৌ অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপমন্ত্রী জ্যাকব বলেন, বর্তমান আ’লীগ সরকার স্বাস্থ্য সেবা জনগণের মাঝে দ্রুত পৌছানোর জন্য উপকুলীয় অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে নৌ অ্যাম্বুলেন্স চালু করার কার্যক্রম শুরু করেছেন। উপকুলীয় অঞ্চলে এই সর্বপ্রথম নৌ অ্যাম্বুলেন্স যুক্ত হলো। উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষ এখন আর স্বাস্থ্য সেবার জন্য চিন্তা করতে হবেনা। বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষ উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে বৈরী আবহাওয়ার মধ্য দিয়ে মুমূর্যূ রোগীদের উন্নত চিকিৎসা জন্য নৌ অ্যাম্বুলেন্স ব্যাবহার করতে পারবেন।
এর পর উপমন্ত্রী জ্যাকব মনপুরা লক্ষাধিক মানুষের প্রানের দাবী নদী ভাঙ্গন রোধ প্রকল্পের ১৯২ কোটি টাকার কাজ পরিদর্শন করেন। মনপুরা মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী পুরণ করায় উপমন্ত্রী জ্যাকব হাজারো মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হন। এসময় উপমন্ত্রী জ্যাকব বলেন, কাজের গুণগত মান যাতে ভালো হয় সেই জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন। কাজ যাতে দ্রুত সম্পন্ন করতে পারে তার জন্য আন্তরীকতার সহিত কাজ করার পরামর্শ দেন।
মেঘনার ভয়াল ভাঙন থেকে সাগর মোহনার মনপুরাকে রক্ষায় ১৯২ কোটি টাকার সিসি ব্লাক এবং জিও ব্যাগ স্থাপন কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলার রামনেওয়াজ ঘাটে ৩ কিলোমিটার জিও ব্যাগ স্থাপন কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত মনপুরা বাসীর প্রানের দাবী নদী ভাঙন রোধ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় ভাঙন কবলিত এলাকায় সরজমিনে পরিদর্শন করেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চরফ্যাশন উপজেলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলাম বিপি, মনপুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি মিসেস শেলিনা আকতার চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সোহাগ হাওলাদার, আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক একেএম শাহজাহান, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মাহমুদুর রশিদ, পানিউন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী ডিভিশন -২ মোঃ কায়সার আলম, উপসহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম, হাজির হাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী দ্বিপক,উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ জাকির হোসেন, দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অলিউল্যাহ কাজল, মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমানত উল্যাহ আলমগীর, সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার, প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেনসহ উপজেলা আ’লীগ, ৪টি ইউনিয়ন আ’লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাএসবকলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, মৎস্যজীবীলীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ।
৩ কিলোমিটার ভাঙন কবলিত এলাকায় ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠন ৫টি প্যাকেজে কাজ করছেন। বানজিং টেক্্রটাইল কোম্পানি ২টি প্যাকেজ, ডন কর্পোরেশন, ওয়েস্টান ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফারিসা এন্টারপ্রাইজ প্রত্যেকটি কোম্পানী ১ করে প্যাকেজের কাজ করছে।
এব্যাপারে কাজের দায়িত্বে থাকা টাক্্রফোর্স এসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নাহিনুর রহমান বলেন, আমরা বালুর গুণগত মান যাচাই করে জিও ব্যাগে বস্তা ভরার নির্দেশ দিয়ে থাকি। ১টি বস্তার ওজন কমপক্ষে ১৯০ কেজি ও বালুর গুনগত মান পরীক্ষা করে ৯৫% হলে মেঘনায় জিও ব্যাগ ফালানো হয়।
কাজের গুণগত মান নিয়ে উপমন্ত্রী জ্যাকব কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা পানিউন্নয়ন বোর্ডের টাক্্রফোর্স প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন।
ডিভিশন ২, পানিউন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবুল কালাম, আঃ রহমান ও মোঃ নিরব হোসেন বলেন, পানিউন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন কাজের তদারকি করছেন। প্রাচীণ এ জনপদকে রক্ষায় সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ স্থাপনের জন্য চলতি বছর ১৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫০টি সিসিব্লক, ১২ লাখ ২ হাজার ৭৫৯টি জিওব্যাগ স্থাপন করবে রামনেওয়াজের ৩ কিলোমিটার নদীরপাড় জুড়ে। প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হবে ২০১৯ সালের জুন মাসে।
-এসইউ/এফএইচ