শুক্রবার ● ২০ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » ভোলায় ইলিশ ধরার অপেক্ষা দেড় লক্ষাধিক জেলে
ভোলায় ইলিশ ধরার অপেক্ষা দেড় লক্ষাধিক জেলে
মো. ছালাউদ্দিন: ভোলার মেঘনায় ও তেতুঁলিয়ায় ইলিশ ধরার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন ১ লক্ষ ৫২ হাজার জেলে। দীর্ঘ ২২ দিন পর আবার পুর্ণোদ্যমে মাছ ধরবেন এমন আশাই জাল বুনছেন ও ট্রলার মেরামতের কাজ করছেন জেলেরা। বর্তমানে তারা জাল বুনে অলস সময় পার করছেন। অবরোধে নেই জেলেদের পুণবাসনের ব্যবস্থা।
মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ইলিশের প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশের অভয়াশ্রমগুলোতে মাছ শিকার, মাছ আহরণ, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। জেলেদের একমাত্র পেশা মাছ ধরতে না পারায় জেলার সাত উপজেলার প্রায় একলক্ষ ৫২ হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়ছে। বর্তমানে নদীতে যেতে না পারায় বেঁড়ীবাঁধ, রাস্তার পাড় কিংবা নদীর কিনারায় বসে জাল বুনে অলস সময় পার করছেন তারা। নদীতে মাছ ধরতে না পেরে বহু জেলে পরিবারে বর্তমানে বাজছে অভাবের করুন সুর।
মাছ ধরার এই নিষিদ্ধ সময়ে অনেকে অতি উৎসাহ দেখিয়ে নদীতে মাছ ধরতে গেলেও বেশীরভাগ জেলেই সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যাচ্ছেনা। যারা অবরোধের সময়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাছ ধরতে যায় তাদের অনেকেই ভ্রাম্যমান আদালতের কবলে পড়ে জাল, ট্রলার, মাছ হারাচ্ছে। আবার অনেকের জেল ও জরিমানা দুটোই হচ্ছে। তবে অসাধু এই জেলেদের বেশীরভাগই প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মাছ ধরছে। এজন্য যারা মাছ ধরতে যায়না তাদের মধ্যে ক্ষোভের কমতি নেই।
জেলেরা বলছেন, আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নদীতে মাছ ধরতে যাইনা। কিন্তু এই অবরোধের সময় জেলেদের কোন পুর্ণবাসনের ব্যাবস্থা করেনি সরকার। আমরা আয় রোজকার না করলে ছেলে-মেয়েদের কিভাবে খাওয়াবো। বসে বসে আমরা আবার দায় দেনার ফাঁদে পড়ছি। আবার কোন জেলে বলছেন, কে মাছ ধরলো আর কে ধরলোনা আমরা তা দেখিনা। সরকার একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন মাছ না ধরার জন্য আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেনে নদীতে যাচ্ছিনা। বর্তমান ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগীতা না থাকায় অভাবী বহু জেলে পরিবারে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা ব্যাস্ত সময় পর করছেন জাল বুনে ও ট্রলার মেরামতের কাজে। সে ২২ দিন তারা মেঘনায় মাছ ধরতে পারেনি সেই সময় তারা তাদের জাল ও ট্রলার কাজে ব্যায় করছেন। চরযতিন গ্রামের ইব্রাহীম মাঝি, মোছলেউদ্দিন মাঝি, মাইনুউদ্দিন মাঝি বলেন, অবরোধের সময় সরকার যদি জেলেদের একটি কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করত তাহলে জেলে পরিবারগুলোর ছেলেমেয়েরা একটু ভালো থাকত। আমরা আর দায় দেনা করতে হতোনা। অনেক জেলে খুব গরিব। কাজ না করলে সংসার চালানো খুব কষ্ঠ হয়।
এব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও আমরা এখন পর্যন্ত জেলেদের পুর্নবাসনের জন্য কোন অর্থ বরাদ্দ পায়নি।
-এফএইচ