শুক্রবার ● ৬ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর » দক্ষিণাঞ্চলের দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ভোলার নিজাম-হাসিনা মসজিদ
দক্ষিণাঞ্চলের দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ভোলার নিজাম-হাসিনা মসজিদ
বিশেষ প্রতিনিধি: দ্বীপ জেলা ভোলায় নির্মিত হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অত্যাধুনিক সৌন্দর্যমন্ডিত নয়ন জুড়ানো স্থাপনা নিজাম-হাসিনা মসজিদ। ভোলা পৌর শহরের উকিল পাড়ায় প্রায় দেড় একর জমির ওপর এ মসজিদটি নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয়। বাহারী কারুকাজ আর সৌর্ন্দয্যমন্ডিত মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় জমান।
জানা গেছে, নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় মার্বেল পাথরসহ বিভিন্ন দামি পাথর ও আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর কারুকার্জ দ্বারা নির্মিত দুই তলা বিশিষ্ট এ মসজিদে রয়েছে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা অজুখানা এবং নামাজের স্থান।
২০১০ সালের জুন মাস থেকে এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরুহয়। প্রায় ৫২ হাজার শ্রমিক মসজিদ নির্মাণের কাজে অংশ গ্রহণ করেছেন। আর্কিটেক্ট ফোরামের ডিজাইনার কামরুজ্জামান লিটন মসজিদটির দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন করেন।
মসজিদটির মিনারের উচ্চতা ১২০ ফুট এবং ৬০ ফুট উচ্চতার গম্ভুজও রয়েছে এ মসজিদে। মসজিদভিত্তিক লাইব্রেরী ও হিফজখানার পাশাপাশি সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ক্যালিগ্রাফি সমৃদ্ধ ডিজাইন ও আল্লাহু ফোয়ারাসহ চারপাশে সাজানো গুছানো ফুলের বাগান রযেছে। যা মসজিদের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার জুমাআর নামাজ আদায়ের মাধ্যমে এ মসজিদটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
এই মসজিদে এক সঙ্গে দুই হাজার মুসল্লি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এসি ও আধুনিক অজুখানা ছাড়াও সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদানে জেনারেটর ব্যবস্থা রয়েছে। সুন্দর টাইলস সমৃদ্ধ ফ্লোরের জন্য রয়েছে সুন্দর কার্পেটের ব্যবস্থা।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলে এটি প্রথম কোনো আধুনিক মসজিদ যা দ্বীপজেলা ভোলায় নির্মিত হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটিকে ঘিরে মানুষের আগ্রহের যেন শেষ নেই। চালু হওয়ার পর থেকে এখানে দুর দুরান্তের মুসল্লিরা নিয়মিত নামাজ আদায় করছেন।
এব্যাপারে নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজ সেবক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, নাম কিংবা পরিচিতির জন্য নয়, আল্লাহর সন্তুটি পেতেই সেবামূলক কাজ করছি।
তিনি আরো বলেন, সবাইকে একদিন পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে তাই মৃত্যুর আগে অন্তত সওয়াবের জন্য এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকেই এই মসজিদটি নির্মাণ করেছি। অসহায় দুস্থদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার পাশাপাশি তাদের জন্য সেবামূলক কাজ করছি। আর সে কারণেই বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছি। এছাড়াও চক্ষু হাসপাতালের মাধ্যমে বিনামূল্যে রোগীদের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হচ্ছে।
গত ৭ বছরে ৯৩ হাজার ৪৬১ জন রোগীকে চক্ষু চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তার মৃত্যুর পর যাতে কোনো কিছুই বন্ধ না হয়ে যায় সে জন্য একটি সুন্দর পরিচালনা কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে এবং তারাই ফাউন্ডেশনের দেখাশুনা করবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য যে, নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের আওতায় এ পর্যন্ত যে সব সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে, তন্মধ্যে, ১৫টি মসজিদ নির্মাণ, এতিমখানা, চক্ষু হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম ও একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
-এফএইচ