বুধবার ● ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » ভোলার বিএভিএস হাসপাতালে দালালের মাধ্যমে জোর করে পুরুষ বন্ধাত্বকরণ চলছে হরহামেশা
ভোলার বিএভিএস হাসপাতালে দালালের মাধ্যমে জোর করে পুরুষ বন্ধাত্বকরণ চলছে হরহামেশা
বিশেষ প্রতিনিধি: আবারো আলোচনায় ভোলার বিএভিএস হাসপাতাল। এবার হাসপাতালটির বিরুদ্ধে দালাল মারফতে এক বৃদ্ধকে জোড় করে ভ্যাসকটমি (পুরুষ বন্ধাত্বকরণ) করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জনতা এক দালালকে আটক করে উত্তম মাধ্যম দিয়ে তাকে পুলিশের হাতে সোর্পদ করা হয়। ভিক্টিম বৃদ্ধ ভোলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগে জানা যায়, গত রবিবার লালমোহনের গজারিয়া এলাকা থেকে কৃষক নাছির উদ্দিন (৫৫) মামলা সংক্রান্ত কাজে হাজিরা দিতে ভোলা সদরে আসেন। এসময় বিএভিএস হাসপাতালের দালাল শামছুদ্দিন তাকে বাংলা স্কুল মোড় থেকে কৃষি ঋণ দেয়ায় প্রলোভন দেখিয়ে জোড় করে কৃষক নাছির উদ্দিনকে হাসপাাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে হাসপাতালের কয়েকজন মিলে একটি কাগজে সাক্ষর রেখে জোর করে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ভ্যাসকটমি (পুরুষ বন্ধতকরণ) করণ করা হয়। এঘটনায় নাছির উদ্দিন হতাশায় ও কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।
পরে তিনি সদরের বাংলা স্কুল মোড়ে এসে বিষয়টি স্থানীয় লোকজন জানালে কিছুক্ষণ পরে ঐ দালাল শামছুদ্দিন বাংলা স্কুল মোড়ে আসলে স্থানীয়রা দালালকে আটক করে উত্তম মাধ্যম দিয়ে টহল রতো পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হয়।
এঘটনায় কৃষক নাছির উদ্দিন ঐ দালাল সহ হাসপাতালের সাথে যারা জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেন। যাতে এই ধরনের প্রতারণের স্বীকার যেন কেউ না হয়।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, বিএভিএস হাসপাতালের কিছু দালাল দারা প্রতিদিন গ্রাম থেকে আসা অসহায় সহজ সরল লোকজনদের ধরে এনে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা প্রলভন দেখিয়ে ভ্যাসকটমি করানো হয়। তাদের জন্য ২৩ শ টাকা বরাদ্দ থাকলেও দেয়া হচ্ছে মাত্র ৫শ টাকা। বাকি টাকা ডাক্তার থেকে শুরু করে দালাল অফিসিয়াল কর্মীরাও ভাগ নেয়। এমনকি কাউকে কোন ধরনের কাউন্সিল না করে জোর করে অহরহোর ভ্যাসকটমি করানো হচ্ছে। ফলে মানুষদের মধ্যে এই বিএভিএস হাসপাতালের বিরুদ্ধে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।
তারা আরো বলেন, ভোলাতে চর অঞ্চল থেকে যারা কোর্টে, হাসপাতালে এমনকি নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশনে চিকিৎসা নিতে আসে তাদেরকে বিএভিএস হাসাপাতালের দালাল মাধ্যমে জোর করে ধরে এনে এই ভ্যাসকটমি করানো হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় মানুষের মাঝে এক ধরনে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই দ্রুত এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করার দাবী জানান তারা। একই রকম অভিযোগ রয়েছে উকিলপাড়া মেরিস্টোপসের বিরুদ্ধে। এর রেস ধরে কয়েক সপ্তাহ আগে বিএভিএস হাসপাতালের প্রধান ডাক্তার মো.মালেককে ভোলা- বরিশাল রোডে মাহিন্দ্রা থেকে নামিয়ে মারধর করে ভুক্তভোগীর স্বজনরা।
এবিএভিএস হাসপাতালের ডাক্তার মো.মালেকে অবৈধ ভাবে জোর করে ভ্যাসকটমি (পুরুষ বন্ধাত্বকরণ) করার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। এসময় তিনি বলেন, বিএভিএস হাসপাতালে যাদের ভ্যাসকটমি করানো হয় তাদের সেচ্ছায় করানো হয়। এখানে ভ্যাসকটমি করতে আসা ব্যাক্তিদের পুরষদের লঙ্গী মহিলাদের শাড়ী ও নগদ ২৩ শ টাকা প্রদান করা হয়। এসময় তাকে দালালদের মাধ্যমে এই ধরনের কাজ করানোর কথা জিজ্ঞাস করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এব্যাপারে ভোলা থানার (ওসি) মীর খাইরুল কবীর বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ভোলা বিএভিএস হাসপাতালের দালাল শামছুদ্দিন আটক করেছি। এবং তার কাছ থেকে গুরত্বপর্ণ তথ্য পেয়েছি। এবং এই দালাল চক্রকে দ্রুত আটক করে আইন আনুক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
-এএইচটি/এফএইচ