শিরোনাম:
●   উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় ●   ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ●   ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ●   চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস ●   ডয়েসে ভ্যালী ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনিস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদকদের কর্মশালা সম্পন্ন ●   ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ●   ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ●   ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ●   ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ●   আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী
ভোলা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলার সংবাদ
বুধবার ● ৩০ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » খেলা » নাটকীয় জয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস
প্রথম পাতা » খেলা » নাটকীয় জয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস
৫৭১ বার পঠিত
বুধবার ● ৩০ আগস্ট ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নাটকীয় জয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস

 ---

ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়াকে নাটকীয় এবং রোমাঞ্চকর ম্যাচে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। টেস্টে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে হারালো টাইগাররা। ২ টেস্টের সিরিজের প্রথমটি জিতে নিয়ে দারুণ মর্যাদার ১-০ এর লিড নিয়ে নিলো। বুধবার মুশফিকুর রহীমের দল অসাধারণ পারফরম্যান্সে তুলে নিয়েছে ২০ রানের জয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৫ রানের টার্গেটের পেছনে ছুটে ২৪৪ রানে অল আউট স্টিভেন স্মিথের দল! মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে তাই উৎসব। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট শিকার করে মূল নায়ক সাকিব আল হাসান। তিনিই ম্যান অব দ্য ম্যাচ। স্পিনাররাই হন্তারক। তাইজুল ইসলাম পেয়েছেন ৩ উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজের শিকার ২ উইকেট।
২০০৬ সাল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ। বছর খানেক আগে অভিষেক হওয়া মুশফিকুর রহীমকে নেওয়া হলো না দলে। টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার ঘরের মাঠে দর্শক হয়ে খেলা দেখা! এটা কতো বড় কষ্টের তা শুধুমাত্র সে খেলোয়াড়ই জানে। ১১ বছর পর সে আক্ষেপ দূর করতে পারলেন মুশফিক। তাও আবার অধিনায়ক হিসেবে। গল্পটা লেখা হতে পারতো ওখানেই। হয়নি। কিন্তু মুশফিকের দল ছাপিয়ে গেল সেটিকে। একেবারে জয় দিয়েই রাঙিয়ে রাখলেন অজিদের বিপক্ষে নিজের অন্যরকম অভিষেক টেস্ট। সাথে ঈদের আগাম উপহার তার দল তুলে দিল দেশের ক্রিকেট পাগল মানুষের হাতে।

শুধু মুশফিক নয়। একাদশের সব খেলোয়াড়েরই অজিদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ছিল এটা। রাজকীয় অভিষেক হয়ে গেলো সবারই। একই সঙ্গে পূর্বসূরীদের ক্ষতে প্রলেপও দিলেন তারা। ২০০৬ সালে ফতুল্লা টেস্টে জয়ের খুব কাছে গিয়েও হেরেছিলেন হাবিবুল বাশাররা। সে ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন রিকি পন্টিং। আর এবার করলেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে পার্থক্য পন্টিং পেরেছিলেন আর ওয়ার্নার পারলেন না। তাই শেরে বাংলা ভাসল উৎসব আর আনন্দের বন্যায়।
অথচ মঙ্গলবারের শেষ বিকেলের মতোই বুধবার চতুর্থ দিনের সকালটা শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান স্মিথ ও ওয়ার্নারের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছিল পুরোনো ইতিহাস নতুন করেই রচিত করতে যাচ্ছেন তারা। উপমহাদেশের মাঠে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে সবার ভাবনাটা সেদিকেই নিয়ে গিয়েছিলেন ওয়ার্নার। সেঞ্চুরির পর তার উচ্ছ্বাসটাও ছিলো তেমন। স্মিথের সাথেও জুটিটাও বিশাল এই উইকেটে। ১৩০ রানের। তবে সাকিবের একটি ম্যাজিক্যাল ডেলিভারিই বদলে দেয় রঙ। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়লেন ওয়ার্নার। তৃতীয় উইকেটটা পড়ল ১৫৮ রানে। ১১২ করে ফিরলেন ওয়ার্নার।

ওখানেই বাংলাদেশের স্পিনারদের বিশেষ করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সাকিবের শুরু। তবে তখনও তো উইকেটে ছিলেন বিপজ্জনক স্মিথ। স্পিনে যার অন্যরকম সুনাম। চেষ্টাও করছিলেন। কিন্তু আবারও সেই সাকিব। অসি অধিনায়কের ক্যাচটা ধরলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। উল্লাস তখন বাধভাঙ্গা। ৩৭ করে বিদায় স্মিথের। ৪ উইকেটে ১৭১ রান অস্ট্রেলিয়ার। সাকিবের কারুকাজ চেয়ে চেয়ে দেখছিলেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। বিজয় মঞ্চে নিজের নাম লেখানোর জন্য আকুপাকু করছিলেন। লেখালেনও। পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও অ্যাস্টন অ্যাগারকে ফিরিয়ে অংশ হলেন মহাকাব্যের।
এরপর আবার সাকিব। ভয় ছিল গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১৪) আর ম্যাথু ওয়েডকে (৪) নিয়ে। ৭ রানের ব্যবধানে এই দুই আপদ বিদায় করে দলকে জয়ের দরজায় নিয়ে গেলেন সাকিব। শুধু তাই নয়, টেস্ট ক্যারিয়ারের এই নিয়ে ইনিংসে ১৭ বার হলো পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি। পাশাপাশি দ্বিতীয়বার ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি।

অস্ট্রেলিয়ার জন্য টেল এন্ডার নিয়ে পথ অনেক দুরের। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য কিছুটা শঙ্কার মেঘের ওড়াউড়ির দেখাও মিলল শেষে। কারণ ব্যাটিংটা খারাপ করছিলেন না করেন না প্যাট কামিন্স ও ন্যাথান লায়ন। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টাও করলেন তারা। জুটি হলো ২৯ রানের। নবম উইকেট জুটি হিসেবে কম নয়। কিছুটা ভয় তো পাইয়ে দিয়েছেন টাইগারদের, সাথে এই দেশের সমর্থকদের। কারণ এই ম্যাচেই আগের ইনিংসে ৪৯ রানের জুটি গড়েছিলেন অ্যাগার ও কামিন্স। আর প্রতিপক্ষের নবম উইকেটে মুশফিকদের ভোগার ইতিহাসও আছে।

শেষ শ্রীলঙ্কায় যে টেস্ট খেলেছে সেখানেও ভুগিয়েছিল এই নবম উইকেট জুটি। প্রথম ইনিংসে সুরাঙ্গা লাকমাল ও দিনেশ চান্দিমালের ৫৫ রান জুটি। দ্বিতীয় ইনিংসে দিলরুয়ান পেরেরা ও লাকমালের ৮০ রান। বিদেশের মাটিই নয়, দেশের মাটিতে শেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টেও এই নবম উইকেট জুটিই চোখ রাঙিয়েছিল। আদিল রশিদ ও ক্রিস ওকস করেছিলেন ৯৯ রানের জুটি। তবে আশার কথা ছিল ওই একটাই, দুইবারই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশই।

ইংল্যান্ড বধের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বুধবার সকাল থেকেই ছিলেন আড়ালে। যদিও এদিনের শুরুটা করেছিলেন তিনি। তবে নার্ভাসনেসের কারণেই হয়তো বেশ কিছু শর্ট বল দিয়েছিলেন তিনি। নবম উইকেট জুটিটা যখন বড় হয়ে উঠছিল তখন মিরাজকেই ফিরিয়ে আনলেন মুশফিক। আর অধিনায়কের আস্থার প্রতিদানটাও দিলেন তিনি। তবে লায়নকে সৌম্যর ক্যাচে পরিণত করলেন এই বিস্ময় অফ স্পিনারই।

তবে লায়ন আউট হওয়ার পর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন কামিন্স। মিরাজকে এক ওভারেই দুটি ছক্কা মেরে পিনপতন নিরবতা এনে দেন মিরপুরে। তবে এরপরই মিরাজের বদলে তাইজুলকে বল দেন অধিনায়ক। তাইজুল তেতে ছিলেন। দারুণ বল করেছেন পুরো ম্যাচে। সেই মতো উইকেট পাননি। কিন্তু এবার পেলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ইনজুরড জশ হ্যাজলউডকে। দুহাত মুঠো করে উদযাপন তাইজুলের। জয়! রোমাঞ্চকর! নাটকীয়! গর্জন মিরপুরে। গর্জন ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের এই দেশে। অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করার ঘোষণা দিয়ে সিরিজ শুরু করা বাংলাদেশ অর্ধেক কাজটা করে রাখলো মিরপুরে। বাকিটা শুরু হবে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রামে। জমজমাট আরেকটি ম্যাচের অপেক্ষা তাই করাই যায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস : ২৪৪/১০ (৭০.৫ ওভার) (ওয়ার্নার ১১২, স্মিথ ৩৭, কামিন্স ৩৩* ; সাকিব ৫/৮৫, মিরাজ ২/৮০, তাইজুল ৩/৬০)।

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ২২১/১০ (৭৯.৩ ওভার) (তামিম ৭৮, মুশফিক ৪১; লায়ন ৬/৮২, অ্যাগার ২/৫৫)।

অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস : ২১৭/১০ (৭৪.৫ ওভার)।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২৬০/১০ (৭৮.৫ ওভার)

ম্যাচের ফল: বাংলাদেশ ২০ রানে জয়ী।

সিরিজ : ২ টেস্টের সিরিজে বাংলাদেশ ১-০ তে এগিয়ে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

© 2024 দ্বীপের সাথে ২৪ ঘণ্টা Bholar Sangbad, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।