সোমবার ● ১৭ এপ্রিল ২০১৭
প্রথম পাতা » বিশ্ব » তুরস্কের গণভোটে এরদোয়ানের জয়
তুরস্কের গণভোটে এরদোয়ানের জয়
ডেস্ক: তুরস্কের গণভোটে নিজের বিজয় দাবি করেছেন দেশটির একে পার্টির প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোয়ান। নির্বাচনে তার বিজয়ের সম্ভাবনা দেখেই রাস্তায় নেমে উল্লাস করতে থাকেন তার সর্থকরা। তবে দেশিটির বিরোধী দলগুলো এখনো ফলাফল মেনে নেয়নি।এদিকে নিজের বিজয় সম্পর্কে এরদোয়ান বলেছেন তার ক্ষমতা বাড়িয়ে নিতে তিনি স্পষ্টতই সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পেয়েছেন এবং এখন সাংবিধানিক সংস্কার বাস্তবায়িত হবে। দেশটির রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন এটা হবে আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংস্কার।
এ গণভোটে ৯৯ শতাংশ ভোট গণনা শেষ এরদোয়ান যখন নিজেকে বিজয়ী দাবি করেছেন। আর তাতে হ্যাঁ ভোটের পক্ষে ছিলো ৫১দশমিক ৩৫ ভাগ আর না ভোটের পক্ষে পড়েছে ৪৮ দশমিক ৬৫ ভাগ ভোট।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের জয়ের সম্ভাবনা দেখে ক্ষমতাসীন একে পার্টির সদরদপ্তরে সমর্থকরা ভীড় করে এবং তারা শ্লোগান দিয়ে, গাড়ীর হর্ণ বাজিয়ে উল্লাস প্রকাশ করে। তার সমর্থকদের দাবি প্রেসিডেন্ট নির্বাহী ক্ষমতা পেলে তা দেশকে উন্নত করবে। তবে তুরস্কের প্রধান দুটি বিরোধী দল ফল এখনো মেনে নেয়নি।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু একটি জায়গায় সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে এবং দিয়ারবাকির এলাকায় ভোট কেন্দ্রের কাছ গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছে। নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে এ গণভোটের আয়োজন করা হয়েছে দেশটির শাসনপদ্ধতি পরিবর্তন করে সংসদীয় পদ্ধতির বদলে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির প্রবর্তন করা হবে কি-না।
নির্বাচনে হ্যাঁ ভোটের জয়ের ফলে এরদোয়ানের সাংবিধানিক সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে প্রেসিডেন্ট হবেন নির্বাহী প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান এবং রাজনৈতিক দলের সাথেও তার সম্পর্ক বজায় থাকবে। আর প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা বিলুপ্ত করে দুই বা তিনজন ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ তৈরি করা হবে। প্রেসিডেন্ট হাতে পাবেন নতুন ক্ষমতা। তিনি মন্ত্রীদের নিয়োগ দেবেন, বাজেট তৈরি করবেন, সিনিয়র বিচারপতিদের অধিকাংশকে নিয়োগও দেবেন তিনিই, এবং ডিক্রি জারি করে কিছু বিষয়ে আইনও করতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট একাই জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন।
পার্লামেন্ট আর মন্ত্রীদের ব্যাপারে তদন্ত করতে পারবে না। আঙ্কারা থেকে বিবিসি সংবাদদাতা বলছেন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বিজয় দাবি করলেও বিরোধীরা নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। তারা বলছেন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ভোটের হিসেবে গড়মিল করেছে এবং তারা একে সুপ্রিম ইলেকশন বোর্ডে চ্যালেঞ্জ করা হবে বলে জানিয়েছে। রিপাবলিকান পিপলস পার্টির অন্তত ৬০ শতাংশ ভোট পুন:গণনার দাবি জানিয়েছে। তবে এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটিতে বিভক্তি আরও শক্ত হয়ে বলে মনে করছেন অনেকেই।
তাদের ধারণা ব্যর্থ অভূত্থানের পর থেকে নিজের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার চেষ্টায় থাকা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে এবং শেষ পর্যন্ত এটি এক ব্যক্তির শাসনে পরিণত হতে পারে, যেটি হবে কোন ধরনের ভারসাম্যহীন একটি রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা। সূত্র : বিবিসি।